অগ্রসর ক্রীড়া ডেস্ক : চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ভারত। বার্মিংহামের এজবাস্টনে বিকেল সাড়ে তিনটায় শুরু হওয়া ম্যাচে টাইগারদের কাছে কোনভাবেই নতী স্বীকার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। পক্ষান্তরে ভারতকে কোন প্রকার ছাড় দিতে নারাজ বাংলাদেশ। কাগজে কলমে ভারত শক্তিশালী দল হলেও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফর্মের কারণে তারা বিশ্বের যে কোন দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখে।
ক্রিকেট বিশ্বের শীর্ষ র্যাংকের আটটি দল নিয়ে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে শ্রীলংকার কাছে পরাজিত হওয়া ভারতীয়রা দুর্দান্ত প্রতাপে শীর্ষ দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত করেছে।
পক্ষান্তরে কার্ডিফে সাকিব-মাহমুদুল্লাহর রেকর্ড পার্টনাশীপে ভর করে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মত আইসিসি আয়োজিত কোন টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। সেমিতে উপমহাদেশের দু’টি দল হওয়ায় এই ম্যাচটি এশিয়ার মধ্যে সর্বাধিক দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এজবাস্টনের এ মাঠেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ১২৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল ভারত। এরপর প্রোটিয়াদের বিপক্ষেও বড় জয় পায় কোহলির নেতৃত্বাধীন দলটি। ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে মাত্র ১৯১ রানেই গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
জবাবে কোহলির অপরাজিত ৭৬ রানের সুবাদে ১২ ওভার হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করেছিল টিম ইন্ডিয়া। এ ম্যাচে অসাধারণ নৈপুণ্যর কারণে আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে শীর্ষ ব্যাটসম্যানের স্থানটি দখল করা কোহলি বলেন, ‘এর আগে আমরা বার্মিংহামে খেলেছি। পিচটি আমাদের খুব পছন্দের। আমরা সহজেই এখানে মানিয়ে নিতে পারি। এখন পিছনে দেখার কোন সুযোগ নেই। সব সময় উন্নতির সুযোগ থেকে যায়। এখন বিশ্রাম না নিয়ে লক্ষ্য পূরণের উপায় খুঁজতে হবে।’
টুর্নামেন্টে উপমহাদেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক দলের অংশগ্রহণটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে করছেন কোহলি। তবে তার চেয়েও ইংলিশ কন্ডিশনেও এশিযার দলগুলোর পারফরমেন্সে বিস্মিত কোহলি বলেন, ‘বেশি সংখ্যক ক্রিকেট ম্যাচ খেলার কারণে এমন উন্নতি চোখে পড়ছে। আমার মনে হয় এর ফলে খেলোয়াড়রা কঠিন পরিস্থিতিতেও অভিজ্ঞতা অর্জনে সক্ষম হচ্ছে। কয়েকটি দল বৈরি পরিস্থিতিতেও ব্যাটিং ও বোলিং নৈপুণ্য দিয়ে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে বিষ্মিত করেছে।’
এদিকে, বাংলাদেশ বোলিংয়ে দারুণ সফলতা প্রদর্শন করেছে। বিশেষ করে কার্ডিফে বোলাররা নিউজিল্যান্ডকে ২৬৫ রানে আটকে রাখার পাশাপাশি আট উইকেট তুলে নিয়ে দারুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। এরপর মাত্র ৩৩ রানে চার উইকেট হারানোর পরও টাইগাররা দারুন একটি জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। সাকিব আল হাসান (১১৪) ও মাহমুদুল্লাহর (১০২) ২২৪ রানের রেকর্ড পার্টনারশীপ টাইগারদের এই জয় এনে দিয়েছে এবং টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দিয়েছে কিউইদের। এরপর এজবাস্টনে ইংলিশরা গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিলে শেষ চারে অংশগ্রহণের নিশ্চিয়তা লাভ করে বাংলাদেশ।
টাইগার দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তাজা মনে করেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে এভাবে জয়ের ঘটনাগুলো খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, ‘বিগত তিন বছর ধরে আমরা উন্নতির ধারায় আছি। আর এই ধরনের পারফর্মেন্স আমাদেরকে আগামীর পথ দেখাবে। বিশেষ করে ২০১৯ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে।’
এ পর্যন্ত ৩২টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে ভারত ও বাংলাদেশ। তন্মধ্যে ভারত ২৬টি এবং বাংলাদেশ ৫টিতে জয় পেয়েছে। একটি ম্যাচে কোন ফলাফল আসেনি।