স্বাস্থ্য চিকিৎসা- আমাদের আজকের বিষয় হচ্ছে আমাদের নখের যত্ন। নখ আমাদের হাত আর পায়ের সৌন্দর্যের একটি অন্যতম অংশ। সুন্দর নখ হাতকে যেমন করে আকর্ষনীয় তেমন পা’কে করে মনকাড়া । কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় আমরা আমাদের হাতের নখের কিছু যত্ন নিলেও পায়ের নখের যত্ন একেবারে নেয়া হয় না। এর ফলাফল হয় ভয়াবহ ,আমাদের অজান্তে আমরা যন্ত্রণার শিকার হই ।নখের সবচাইতে বড় শত্রু হচ্ছে ফাঙ্গাস। নখের যত্ন সময় থাকতে না নিলে পরবর্তিতে নখের ফাঙ্গাস বাড়তেই থাকে ,একটা সময় অপারেশন ছাড়া আর গতি থাকে না আবার অপারেশন করলে যে সমপূর্ণ ভাল হয়ে যাবেন সেটাও কিন্তু হলফ করে বলা যায় না। সবচাইতে সমস্যায় পরেন যারা ডায়বেটিক এর রোগী,কারণ তাদের যে কোনো ক্ষত সারতে সময় লাগে এমনকি অনেক সময় ভালো ও হয় না। তাহলে আসুন আমরা জেনে নেই নখের যত্নে আমরা কি কি করতে পারি।
১.নেইল কাটারের ব্যবহার :
যখনি নখ কাটবেন তার আগে অবশ্যই নেইল কাটার ধুয়ে নিবেন ,দরকার হলে সাবান দিয়ে ধুবেন। সবার জন্য আলাদা নেইল কাটার রাখতে পারলে ভালো হয় ,কিন্তু এটা অনেকের জন্য সম্ভব না । তাই অন্তত পরিষ্কার রাখাটা অনেক জরুরি, নাহলে এমন কেউ যদি কাটার দিয়ে নখ কেটে থাকে যার নখে ফাঙ্গাস আছে আর আপনি কাটার পরিস্কার না করেই আপনার নখ কাটলেন এতে আপনিও আক্রান্ত হবেন। তাই এ ব্যাপারে সাবধান।কাটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে মনে রাখবেন, কেনার সময় খেয়াল করতে হবে যেন ধার (শার্পনেস ) ভালো থাকে নাহলে নখ জখম হবে।
২. নখ ভিজিয়ে নিন :
নখ কাটার সবচাইতে ভালো সময় গোসলের পরে.এ সময় নখ নরম থাকে আর সহজে নখ কাটাও যায়। এছাড়া আপনি নখ কাটার আগে ৪/৫ মিনিট হালকা গরম পানিতে খাবার লবণ মিশিয়ে নিন আর তাতে হাত,পা,ভিজিয়ে রাখুন। এর পরে সাবান দিয়ে হাত পা ধুয়ে ,মুছে নখ কাটবেন।
৩. ময়েস্চরায়জার ব্যবহার করুন :
আমাদের শরীরের মত আমাদের নখের জন্যেও দরকার ময়েস্চরায়জার।আমরা নেইল পলিশ রিমুভার দিয়ে তুলি এর ফলে নখের আদ্রতা হারিয়ে যায়। এ কারনে যখনি আপনি লোশন লাগাবেন নখ গুলোতেও মালিশ করবেন।
৪. নকল নখ লাগানো পরিহার করুন:
আমরা আজকাল বিভিন্ন কায়দা করে নকল নখ লাগাই, এ প্রক্রিয়া ক্রমাগত করতে থাকলে আমাদের নখে ফাঙ্গাস আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।মনে রাখবেন কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো না। যারা নেইল পালিশ বেশি ব্যবহার করেন তারা লক্ষ্য করবেন যে নখ হলুদ হয়ে গেছে। এর থেকে ফাঙ্গাস আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও বেড়ে যায় ।
৫. নখের যত্নে করণীয় :
নখ কাটার সময় অবস্যই সাবধান হতে হবে। অনেক সময় নখের কোনায় চামড়া উঠে যায় বা ছোট নখের মতই অংশ উঠে ,যার জন্য নখের পাশে খুব ব্যাথা করে ,ফুলে যায়,আপনি কখনো এগুলোকে ব্যাথা থাকা অবস্থায় কাটবেন না। নাহলে ঘা হয়ে যাবে।বিশেষ করে ডায়বেটিক রোগীরা তো একেবারে না। নখের পাশে মরা চামড়া থাকে সেগুলোকে হালকা ভাবে নখের গোড়ার দিকে ঠেলে দিন, পরে আস্তে আস্তে ওগুলো পড়ে যাবে।নখ সোজা করে কাটবেন। যে পাশ দিয়েই কাটেন না কেন কাটার সোজা রেখে কাটবেন। কেচি ব্যবহার না করা ভালো নখ কাটার সময়। নখ কাটার পরে নখ ফাইলিং করে নিবেন। এতে করে আপনার নখের কাটা অংশ ধার হবে না আর আচর ও লাগবে না নিজেকে। তাছাড়া নখ দেখতেও সুন্দর হবে। মনে রাখবেন নখ খুব ছোট করেও কাটবেন না আবার বড় ও রাখবেন না। বেশি ছোট করলে আঙ্গুলের মাংসর কেটে যাবার ভয় থাকে আর নখ বড় রাখলে ভেঙ্গে যাবার শংকা থাকে।
যদি কোনো কারনে আপনার আঙ্গুলের নখ ফাঙ্গাস আক্রান্ত হয়ে থাকে তবে দেরী না করে তার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন।প্রাথমিক ভাবে আপনি দুবেলা নখ ধুয়ে, মুছে সম পরিমানের পানি আর আপেল সিডার ভেনিগার মিশিয়ে লাগাতে পারেন অথবা হার্বাল লেমন গ্রাস তেল ২ ফোটা করে দিনে রাতে লাগাতে পারেন। তবে অনুরোধ করবো যে কোনো কিছু লাগানোর আগে একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন কারণ সবার ত্বক একই না ,যা আমার জন্য প্রযোজ্য তা আপনার জন্য প্রযোজ্য নাও হতে পারে।কিন্তু মোট কথা বেশি ক্ষতি হবার আগে নিজের নখের যত্ন নিন,সামান্য মনে করে আজকে অবহেলা করলে কালকে ফলটা আপনাকে ভোগ করতে হবে।
লিখাটা আপনাদের কেমন লাগলো তা জানার অপেক্ষায় রইলাম,আপনাদের মতামত আমাদের কাম্য।ইমেইল করে বা কমেন্টস এ আপনাদের কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা যতটুকু পারি আপনাদের সাহায্য করার চেষ্টা করব। ভালো থাকুন , সুস্থ থাকুন আর আমাদের সাথেই থাকুন।