অগ্রসর রিপোর্ট : শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচ উপভোগ করলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। যেখানে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ হারিয়েছে বাংলাদেশ। ১৬ই ডিসেম্বরের সকালে দেশের মানুষের উৎসবের উপলক্ষ্যটা আরেকটু চওড়া হলো বাংলাদেশ জাতীয় দলের শ্বাসরুদ্ধকর এই জয়ের সুবাদে।
আজ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সেন্ট ভিনসেন্টেতিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের দেওয়া ১৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয়ে পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টাইগার বোলারদের বোলিং তোপে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন-আপ। যার ফলে মাত্র ৬১ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে হারিয়ে বসেছে স্বাগতিকরা। এরপরেই জুটি গড়েন রভম্যান পাওয়েল ও রোমারিও শেফার্ড। অর্ধশতক তুলে নেন রভম্যান পাওয়েল। তবে এই জুটি ভেঙে গেলে ১৪০ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। আর বাংলাদেশ তুলে নেয় ৭ রানের জয়।
প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন জনসন চার্লস ও ব্র্যান্ডন কিং। তবে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই এই জুটিকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বলে তানজিদ হাসান তামিমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ব্র্যান্ডন কিং। তার বিদায়ে ১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তাসকিনের পর ক্যারিবীয়ান শিবিরে বোলিং তাণ্ডব চালান শেখ মেহেদী হাসান। তার বোলিং তোপে একে একে সাজঘরে ফিরে যান নিকোলাস পুরান, জনসন চার্লস, আন্দ্রে ফ্লেচার ও রোস্টন চেস। জনসন চার্লসছাড়া এই চার ব্যাটারের কেউই পেরোতে পরেননি প্রথম অঙ্কের ঘর। এই চার ব্যাটারের দ্রুত বিদায়ে ৩৮ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
৩৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন রভম্যান পাওয়েল ও গুডাকেশ মোটি। তবে বেশিদূর এগোনোর আগেই এই জুটিকে থামান তানজিম হাসান সাকিব। তানজিম হাসান সাকিবের বলে লিটন কুমার দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান গুডাকেশ মোটি। আউট হওয়ার আগে করেন ১০ বলে ৬ রান। তার বিদায়ে ৫৮ রানেই ৬ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তানজিম হাসান সাকিবের পর ক্যারিবীয়ান শিবিরে আঘাত হানেন রিশাদ হোসেন। রিশাদের বলে ডিপ মিড উইকেটে শামীম হোসেন পাটোয়ারীর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদাযে ৬১ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।
এরপরেই রোমারিও শেফার্ডকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন রভম্যান পাওয়েল। বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ তিনি ২৩ বলে তুলে নেন অর্ধশতক। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠছিল এই জুটি। অবশেষে এই জুটিকে থামিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন তাসকিন।
তাসকিনের বলে ডিপ মিড উইকেটে শামীম হোসেন পাটোয়ারীর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান রোমারিও শেফার্ড। তার বিদায়ে ভাঙে ৬৭ রানের জুটি।
রোমারিও শেফার্ড ফিরে গেলেও লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন রভম্যান পাওয়েল। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ১০ রান। ক্রিজে ছিলেন রভম্যান পাওয়েল। যা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
তবে তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন হাসান মাহমুদ। হাসান মাহমুদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য হলেন তিনি। সেখানেই মূলত জয়টা নিশ্চিত হয়ে যায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের জন্য। এরপর এক বল বিরতি দিয়ে বোল্ড আলজারি জোসেফ। তাতেই নিশ্চিত দারুণ এক জয়।
এর আগে আজ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সেন্ট ভিনসেন্টে টস হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে টাইগাররা। যার ফলে ৯৬ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। এরপরেই জুটি গড়েন শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও শেখ মেহেদী হাসান। ষষ্ঠ উইকেটে এই জুটির ৪৯ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান তুলে বাংলাদেশ।