পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান সন্ধ্যার মধ্যে শেষ করতে সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে, তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
শুক্রবার জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সাধারণ সম্পাদক আহকামউল্লাহর পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, “বাঙালির সবচাইতে বড় সার্বজনীন অসাম্প্রদায়িক উৎসব হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। শত শত বছর ধরে গ্রামবাংলার বৈশাখী মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গ্রামীণ খেলাধুলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষ পালিত হয়ে আসছে। নগরায়নের সাথে সাথে নগরে-শহরেও এ উৎসব সম্প্রসারিত হয়েছে। সকাল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে থাকে।
“বৈশাখী উৎসব এবং মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের জন্য প্রত্যেক উপজেলায় সরকারি বরাদ্দ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের নির্দেশনা থাকলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত বলেই বিবেচিত হচ্ছে। সকল জাতীয় দিবস এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের সময়ের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও শুধুমাত্র বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ আয়োজনকে সীমিত করে দেওয়া কখনই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমরা মনে করি, এই সিদ্ধান্তের ফলে বাঙালি সংস্কৃতি-বিরোধী শক্তি উল্লসিত হবে।”
পহেলা বৈশাখে রাজধানীর রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হাতিরঝিল ও রবীন্দ্র সরোবরসহ দেশে যেসব অনুষ্ঠান খোলা জায়গায় হবে, সেগুলো সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এছাড়া বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে এবং মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে যারা পহেলা বৈশাখের সকালে ক্যাম্পাসে যাবেন, তাদের বরাবরের মতই কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
যেমন বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবারও কোনো ধরনের মুখোশ পরা যাবে না, বহন করা যাবে না ব্যাগ। তবে চারুকলা অনুষদের বানানো মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ষবরণের সব আয়োজন বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করাসহ ভুভুজেলা বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।