অগ্রসর রিপোর্ট : চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য ও শহীদ জাবেদ মুক্ত স্কাউট গ্রুপের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিক উল্লাহকে (৭০) ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার সন্ধ্যায় শহরের নতুন বাজার সফিনা আবাসিক হোটেলের তৃতীয় তলায় একটি কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। রফিক উল্লাহ ওই এলাকার বাসিন্দা মরহুম মো. হেদায়েত উল্যাহ কোম্পানীর ছোট ছেলে। তিনি অবিবাহিত ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, মাগরিবের নামাজের পর রফিক উল্লাহকে খুঁজতে গিয়ে ওই কক্ষে প্রবেশ করেন বাসার কেয়ারটেকার মিরাজ। সেখানে গিয়ে দেখেন কে বা কারা ছুরিকাঘাত করে, একটি ছুরি শরীরে বিদ্যমান ও রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে গেছেন মুক্তিযোদ্ধাকে।
মিরাজের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন এবং ওই অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রফিকউল্লাহকে দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মিরাজ বলেন, মাগরিবের নামাজের সময় আমি বাইরে ছিলাম। ওই সময় মামা খাটে শুয়ে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর বাসায় এসে দেখি মামা নিচে পড়ে রয়েছে। আমি কিছু বুজতে না পেরে চিৎকার শুরু করি। তখন ঘরে থাকা দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। যারা মামাকে হত্যা করেছে তারা প্রায় সময়ই মামার কাছে আসত। আমি শুধু তাদের চেহারা চিনি কিন্তু নাম জানি না।
পুলিশ জানায়, রফিক উল্লাহ চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত সফিউল্লাহ বোডিং ভবনের ৩য় তলায় বিশ্রামে ছিলেন। মাগরিবের নামাজের সময় দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে তাকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সাগর মজুমদার বলেন, নিহত রফিকুল্লাহকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও ফুসফুসে আঘাত পাওয়ায় দ্রুত মৃত্যু হয়।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় বলেন, আমরা ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে মরদেহ দেখেছি। প্রাথমিকভাবে আমরা বুঝতে পেরেছি এটি ছুরিকাঘাতে হত্যা। আমাদের কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন। বাড়ির কেয়ার টেকার মিরাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার বিস্তারিত পরবর্তীতে আপনাদেরকে জানানো হবে।
এদিকে, এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মর্মান্তিক মৃত্যুর সংবাদ জেনে হাসপাতালে দেখতে আসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল ও চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ।