মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় কৃষক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদারকে ফরিদপুরের সালথায় বদলি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাতের দিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক রবী আহ নূর আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বদলির আদেশে জানা যায়, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদারকে ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে তাকে দায়িত্বভার হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে, অন্যথায় ১৭ এপ্রিল থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্তি হিসেবে গণ্য হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রবী আহ নূর আহমেদ বলেন, একই দিনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে দুটি আদেশের কপি আসে। একটিতে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন সবুজকে দিনাজপুর অঞ্চলে বদলির আদেশ, অন্যটিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদারকে ফরিদপুর জেলার সালথায় বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে। রাজিয়া তরফদারের স্থলে সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদারকে শিবালয়ে বদলি করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ২ এপ্রিল সকালে শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নের গহেরপুর গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান তার ক্ষেতের পোকা ধরা একগুচ্ছ ধান নিয়ে পরামর্শের জন্য কৃষি কার্যালয়ে যান। এসময় তিনি সংশ্লিষ্টদের ধানের ছবি তুলতে বলেন এবং জেলার উপ-পরিচালকের ফোন নম্বর চান। একই সঙ্গে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে যান না বলে অভিযোগ করেন কৃষক ফজলুর। এতে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন সুজন। তিনি ওই কৃষককে বলেন, ‘আমি কি আপনার কামলা দেই? আপনি কি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন? আপনি বললেই মাঠে যেতে হবে? যা পারেন করেন গা। আপনি বেরিয়ে যান। যদি বয়স্ক লোক না হতেন, তাহলে আপনাকে দেখে নিতাম। ’ একপর্যায়ে তাকে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়।
পরে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালে ওই কৃষককে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদারের কাছে যান। এসময় সাংবাদিকদের সামনেই কৃষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন তিনিও। সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদার। এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।