অগ্রসর রিপোর্ট : ঢাকায় নবনিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে ভারতের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আজ সন্ধ্যায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আগমন বাংলাদেশের জন্য একটি বোঝাস্বরূপ। আমরা এই ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে রয়েছি।’
বৈঠকের পরে আজ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ভারতের হাইকমিশনারকে উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম একথা বলেন।
ভারতের হাইকমিশনার বলেন, বিপুল সংখ্যক এসব বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদান করার এই মহান মানবিক ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছে। বৈঠকে রিভা গাঙ্গুলী ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন শেখ হাসিনাকে। এ সময় বাংলাদেশকে ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র এবং উন্নয়ন অংশীদার হিসেবেও তিনি বর্ণনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত এক দশকে বাংলাদেশের চমকপ্রদ আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ভারতের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ এই সময়ের মধ্যে যে সকল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এবং উন্নয়ন ঘটেছে তাতে তিনি অভিভূত।
ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতার প্রসংগে তিনি বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতার আরো নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’
‘ভারত- বাংলাদেশ যৌথ কমিশনকে কার্যকর করা হয়েছে’ উল্লেখ করে এই বিষয়ে দিল্লী তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে,’বলে জানান হাই কমিশনার।
ভারত-বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগিতার প্রসংগে রিভা গাঙ্গুলী বলেন, এ ধরনের সহযোগিতার ক্ষেত্রে সবসময়ই উভয় পক্ষের জন্য একটি উইন উইন পরিস্থিতি বিরাজ করে।
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আপনারা এক্ষেত্রে অতুলনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন।’ দুই দেশের কানেকটিভিটির প্রসংগে হাইকমিশনার বলেন, এই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধিত হলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী নবনিযুক্ত হাইকমিশনারকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তিনি তাঁকে ভারতের হাইকমিশনার হিসেবে পেয়ে খুবই আনন্দিত।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তাঁকে আশ্বস্ত করেন, তাঁর (প্রধানমন্ত্রীর) সরকার হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনে তাঁকে সর্বান্তকরণে সহযোগিতা করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার এবং সে দেশের জনগণ বাংলদেশকে তাঁর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময় থেকেই সবসময় সহযোগিতা করে আসছে।
ভারত এবং বাংলাদেশ তাদের মধ্যকার দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা সীমান্ত সমস্যার সমাধান করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালীন সহযোগিতার মতই একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। য়েখানে সমস্যাটির সমাধানে ভারতের সংসদে সকল দল একত্রিত হয়ে এতে সমর্থন ব্যক্ত করে।’
এ প্রসঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার বলেন, এটি প্রতিবেশি দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ প্রশ্নে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাতে কখনও বাংলাদেশের ভূখন্ডকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
বিগত এক দশকে দেশের চমকপ্রদ উন্নয়নের চুম্বক অংশ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধনই তাঁর সরকারের মূল লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এববং ঢাকায় ভারতের উপহাইকমিশনার ড. আদর্শ সোয়াইকা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।