বিনোদন প্রতিবেদক : দেশের ব্যান্ড সংগীতের পুরোধা, জনপ্রিয় সংগীত সাধক শিল্পী লাকী আখান্দ আর নেই। তিনি চলে গেলেন ভক্তকুলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যূকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর।
লাকি আখান্দ দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন। গত প্রায় আড়াই মাস তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গেল সপ্তাহে আরমানিটোলার নিজ বাসায় ফিরে যান কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী। আজ সন্ধ্যায় সেখানেই তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি বরেণ্য এ শিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিএসএমএমইউর সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারে ভর্তি করা হয়। তিনি সেখানে অধ্যাপক নেজামুদ্দিন আহমেদের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এর আগে ছয় মাসের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ দেশে ফেরেন তিনি। সেখানে কেমোথেরাপি নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছিল তার। একই বছরের জুনে আবার থেরাপির জন্য ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে পরে আর তার সেখানে যাওয়া হয়ে ওঠেনি।
অসুস্থতার প্রথম থেকেই লাকী আখান্দ ও তার পরিবার কোনো রকম আর্থিক সহযোগিতা গ্রহণের বিষয়ে বেশ কঠোর ছিলেন। দেশের শীর্ষ শিল্পীদের উদ্যোগে সহযোগিতা করতে চাইলেও বিনয়ের সঙ্গে লাকী আখান্দ তা নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন থাকার সময় তার চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা সহায়তা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রীয় ভালবাসা হিসেবে সেটি তিনি গ্রহণ করেন।
লাকী আখান্দের উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় কালজয়ী গানের মধ্যে রয়েছে ‘এই নীল মনিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘মামনিয়া, ‘লিখতে পারি না কোনও গান’ প্রভৃতি এখনো সংগীত পিপাসুদের মুখে মুখে ঘুরে ফিরছে।
আশির দশকের তুমুল জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী লাকী আখান্দ একাধারে সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার ও গীতিকার। ১৯৮৪ সালে সারগামের ব্যানারে প্রথমবারের মতো একক অ্যালবাম বের করেন লাকী আখান্দ।
ওই অ্যালবামের ‘এই নীল মণিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘রীতিনীতি জানি না’, ‘মামনিয়া’, ‘আগে যদি জানতাম’ গানগুলো শ্রোতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
১৯৮৭ সালে ছোট ভাই হ্যাপী আখান্দের মৃত্যুর পর সঙ্গীতাঙ্গন থেকে অনেকটাই স্বেচ্ছা নির্বাসন নেন এই গুণী শিল্পী।
মাঝখানে প্রায় এক দশক নীরব থেকে ১৯৯৮-এ ‘পরিচয় কবে হবে’ ও ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’ অ্যালবাম দুটি নিয়ে আবারও শ্রোতাদের মাঝে ফিরে ছিলেন তিনি।