অগ্রসর রিপোর্টঃ ভারতের মানবাধিকার কর্মী ইরম শর্মিলা চানু প্রায় দেড় দশক পর অনশন ভাঙলেন। মঙ্গলবার সকালে সে কারণেই হাসপাতাল থেকে আদালতের উদ্দেশে যান শর্মিলা। সেখানেই বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে অনশন ভাঙলেন এ লৌহমানবী। তবে অনশন ভাঙার পর তিনি এখনই বাড়ি ফিরবেন কিনা তা জানা যায়নি।
ইরম শর্মিলা গত ১৬ বছর ধরে অনশন করছেন। তিনি ২০০০ সালের ২ নভেম্বর থেকে মনিপুরে তার এ অনশন শুরু করেন। তার বাড়ির কাছে একটি বাসস্টপে সেনাবাহিনী ১০ ব্যক্তিকে হত্যা করে। তিনি নিজে তা প্রত্যক্ষ করেন। এরপরই মণিপুরসহ ভারতের উত্তরপূর্ব ও কাশ্মীর এলাকায় আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট (এএফএসপিএ) প্রত্যাহারের দাবিতে তিনি অনশন শুরু করেন।
বিশেষ এ ক্ষমতার কারণে সেনাবাহিনী যেখানে সেখানে তল্লাশি, দেখামাত্র গুলির ক্ষমতা রাখে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, এএফএসপিএ’র কারণে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে। কিন্তু ভারত সরকারের দাবি ওইসব অঞ্চলের বিদ্রোহী গ্রুপগুলোকে দমনে এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এদিকে এতোগুলো বছরেও শর্মিলাকে তার অনশন ভাঙানো কিংবা সিদ্ধান্ত থেকে টলানো যায়নি। ফলে তার নামের পাশে ‘লৌহ মানবী’ ও ‘অগ্নিকন্যা’ তকমা জুটে গিয়েছিল। অনশনকালে শর্মিলা আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। ভারতে আত্মহত্যা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়ায় তাকে এতোদিন বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখা হয়। এছাড়া নাকে প্লাস্টিক নল ঢুকিয়ে তাকে জোর করে খাওয়ানোও হতো।
মনিপুরের রাজধানী ইম্ফলে আদালতের সামনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ব্যক্তিগত লিখিত অঙ্গীকারনামার মধ্যদিয়ে আমি জামিনে মুক্তি পেয়েছি।
এছাড়া দুসপ্তাহ আগে শর্মিলা তার সমর্থকদের বিস্মিত করে ঘোষণা দেন, মুক্তি পেয়ে তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে ২০১৭ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন।
ওই সময়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমার এ যুদ্ধ একক যুদ্ধ। তাই এএফএসপিএ’র বিরুদ্ধে আমি আইনপ্রণেতা হয়ে গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।