স্টাফ রিপোর্টার:বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (BIWTA)-এর ক্রয় ও সংরক্ষণ বিভাগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে ঘিরে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সরকার বদলালেও প্রতিষ্ঠানটির নীতিনির্ধারণ বা কর্মকাণ্ডে তেমন কোনো পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং পুরনো ধারা বজায় রেখে একই রকম প্রক্রিয়ায় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে—যা নীতিগত স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলেছে।সূত্র জানায়, চলতি বাজেট বরাদ্দ থেকে মাত্র তিনটি টেন্ডার (যেমন—কর্মচারীদের জুতা, পোশাক ও স্টেশনারি সরবরাহ) E-GP পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি প্রায় সব টেন্ডারই LTM (Local Tender Method)-এর মাধ্যমে হাতে-কলমে করা হয়, যা জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার অভাব তৈরি করেছে।সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টাকা লেনদেনের অভিযোগএই প্রক্রিয়ার মূল ভূমিকা পালন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে সহকারী পরিচালক আবুল কাশেম ও ক্যাশিয়ার আব্দুস সালাম-এর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, ১০% নগদ কমিশনের ভিত্তিতে তারা নিজ পছন্দের কিছু ঠিকাদার, বিশেষ করে R-Tech নামের একটি কোম্পানিকে বারবার কাজ দিয়ে কোটি কোটি টাকার অনিয়ম করেছেন।প্রাপ্ত তথ্যমতে, কম্পিউটার সরঞ্জাম, স্টেশনারি মালামাল, প্রিন্টিং ও ছাপাখানার কাজ প্রায় এককভাবে একটি নির্দিষ্ট কোম্পানিকে দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, হিসাব ও নিরীক্ষা বিভাগ যদি তদন্তে নামে, এসব অনিয়মের প্রকৃত চিত্র প্রকাশ পাবে।সিডিউল বিক্রিতে বাধা, সাধারণ ঠিকাদারদের হেনস্তাগত ১৮ জুন ২০২৫-এ অনুষ্ঠিত একটি LTM টেন্ডারে অভিযোগ রয়েছে—ক্যাশিয়ার আব্দুস সালাম ইচ্ছাকৃতভাবে ঠিকাদারদের সিডিউল কিনতে দেননি। এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে বলে একাধিক গোপন সূত্র নিশ্চিত করেছে।এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করলে সাধারণ ঠিকাদারদের ‘আওয়ামী লীগপন্থী’ বলে আখ্যা দিয়ে হয়রানির হুমকিও দেওয়া হয়। কেউ কেউ জানিয়েছেন, পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়, যা একটি স্বাধীন ব্যবসা পরিবেশের পরিপন্থী। নৌপরিবহন উপদেষ্টা ও সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ:বরিশাল ও নারায়ণগঞ্জে CCTV ক্রয়েও অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, “আমরা সরকারকে নিয়মিত ভ্যাট-ট্যাক্স দিই, অথচ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হই। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক এবং রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর।”এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা মাননীয় নৌপরিবহন উপদেষ্টা ও সচিব মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অনুরোধ করেছেন— এসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত তদন্ত করে বিচার নিশ্চিত করা হোক।(চলবে)

প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।