অগ্রসর রিপোর্ট :জিতলেই সিরিজের দফারফা হয়ে যেতো। দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করত বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহর দলকে সেই সুযোগটা দিল না নিউজিল্যান্ড। দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয়টিতে আজ ৫২ রানে জিতেছে সফরকারীরা। এই জয়ে সিরিজের ব্যবধান দাঁড়াল ২-১। প্রথম দুই ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ।
জয়ের জন্য ১২৯ রান করতে হতো বাংলাদেশকে। যে ১১জনকে আজ একাদশ সাজিয়েছিল বাংলাদেশ তাদের ৯ জনই ব্যাট করতে পারেন। তবুও ৭৬ রানের বেশি তুলতে পারেনি মাহমুদউল্লাহর দল। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ, যার বেশিরভাগই ছিল নিজেদের ভুলে।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১২৮ রানের জবাব দিতে নেমে প্রথম উইকেটে ২৩ রান তোলেন দুই ওপেনার নাইম শেখ ও লিটন দাস, ওটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। কোল ম্যাকনকিকে তুলে মারতে গিয়ে লাইন মিস করে লিটন দাস ১৫ রান করে এলবিডব্লিউ হলে এই জুটি ভাংগে।
মিডল অর্ডারের শেখ মেহেদি হাসানকে পাঠানো হয়েছিল তিনে। এজাজ প্যাটেলের বলে আলসে শট খেলে মেহেদি ফিরলেন ৪ বলে ১ রান করে। এই এজাজ আর ম্যাকনকিই বেশি ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। মেহেদি ফেরার দুই বল পরই এজাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন সাকিব (০)।
ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের বড় হার, সিরিজে ফিরল নিউজিল্যান্ড
পাঁচে নেমে মুশফিকুর রহিম একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন শেষ পর্যন্ত। তবে অন্য প্রান্তে আসা যাওয়ার মিছিলে নামলেন মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, সাইফুদ্দিনরা। কিউইদের স্পিনকে দূরহ বানিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৯.৪ ওভারে ৭৬ রানে থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানের স্কোর এটি। সর্বনিম্ন ৭০, ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই কলকাতায় ৭০ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
একপ্রান্ত আগলে রেখে মুশফিকের ২০ রান বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ স্কোর। এছাড়া দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পেরেছেন যে দুজন তার একজন লিটন দাসের রান ১৫, অপরজন নাইম শেখের রান ১৩। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৪ ওভারে ১৬ রানে চার উইকেট নিয়েছেন এজাজ প্যাটেল। কোল ম্যাকনকি চার ওভারে ১৫ রানে নিয়েছেন তিন উইকেট।
ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের বড় হার, সিরিজে ফিরল নিউজিল্যান্ড
এর আগে মিডল অর্ডার ব্যর্থ হলেও টপ অর্ডার ও শেষের দিকের ভালো ব্যাটিংয়ে ১২৮ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। আজ উইকেট দেখে মনে হয়েছে ‘খুব বেশি দূরুহ নয়’। করোনা থেকে সেড়ে উঠে মাঠে ফেরা ফিন অ্যালেন শুরুতে দারুণ গতিতে রান তুলছিলেন। মোস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ার বুঝতে না পেরে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হওয়ার আগে ১০ বলে ১৫ করেছেন তিনটি চার হাঁকিয়ে।
তিনে নেমে উইল ইয়ংও বেশ ভালোই এগুচ্ছিলেন। দ্বিতীয় উইকেটে ইয়ং এবং ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রর জুটিটি ছিল ৩০ রানের। কিন্তু সপ্তম ওভারে এই দুজনকেই তুলে নিয়ে কিউইদের লাগাম টেনে ধরেন সাইফউদ্দিন। এরপর নিউজিল্যান্ডের মিডল অর্ডার প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। সাকিব আল হাসান উইকেট না পেলেও রান আটকে রেখেছিলেন। শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ ব্রেকথ্রু এনে দেন। তবে শেষ দিকে হেনরি নিকোলাস ও টম ব্যান্ডেল কার্যকারী এক জুটি গড়ে তোলেন।
নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের বেশিরভাগ রানই উঠেছে এই দুজনের জুটিতে। ষষ্ঠ উইকেটে ৬৬ রান তুলেছেন দুজন। নিউজিল্যান্ড ২০ ওভারে ৫ উইকেটে থেমেছে ১২৮ রানে। নিকোলাস ২৯ বলে ৩টি চারে ৩৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ব্যান্ডেল ৩০ বলে ৩০ রান করতেও চার মেরেছেন তিনটি।
বাংলাদেশের পক্ষে ২৮ রানে দুই উইকটে নিয়েছেন সাইফউদ্দিন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, শেখ মেহেদি হাসান ও মাহমুদউল্লাহ।