অগ্রসর রিপোর্ট: চট্টগ্রামে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত জশনে জুলুসে পদদলিত হয়ে দুজনের মৃত্যু এবং অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে নগরের মুরাদপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা আইয়ুব আলী (৬০) এবং নগরের কালামিয়া বাজার এলাকার সাইফুল ইসলাম (১৩)। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী ইনচার্জ সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আহতদের মধ্যে একজনকে নিবিড় পরিচর্যার কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন আঞ্জুমানে রহমানিয়া ট্রাস্টের মেডিকেল টিমের সদস্যরা। তাদের একজন, আমিনুর রহমান জানিয়েছেন, ভিড়ের মধ্যে গরমে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েকজন নিচে পড়ে গেলে পদদলিত হন হতাহতরা।
জুলুসের আনুষ্ঠানিকতা সকাল ১০টায় আলমগীর খানকা শরীফ থেকে শুরু হয়। শোভাযাত্রার নিরাপত্তায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকে এবং আঞ্জুমানের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করেন। ভোর থেকেই নগরের বিভিন্ন মোড় প্রস্তুত থাকে ট্রাক ও মিনি ট্রাক সাজিয়ে জুলুস সফল করার জন্য। এর আগে, শুক্রবার দিবাগত রাত থেকেই ষোলশহর জামেয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা এলাকায় লাখো মানুষ ভিড় জমান।
চট্টগ্রামে জশনে জুলুস আয়োজনের ঐতিহ্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৩ বছর পর থেকে ইসলামি বর্ষপঞ্জির ১২ রবিউল আউয়ালে শুরু হয়। এ ঐতিহ্যবাহী জুলুসের নেতৃত্ব দেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মাদজাল্লাহু আলি), যেখানে বিভিন্ন পীর-মাশায়েখ ও আলেম-ওলামারা অংশ নেন।
পথে পথে স্বেচ্ছাসেবকরা শরবত, পানি ও তাবাররুক বিতরণ করেন, ছোট শিশুরাও হাতে শরবতের গ্লাস নিয়ে ভক্তদের আপ্যায়ন করে। বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও এই সেবায় অংশ নেন। ফলে পুরো জুলুস রূপ নেয় অতিথি আপ্যায়ন ও ভ্রাতৃত্বের মহা উৎসবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে জুলুস আয়োজন শুরু হয় ১৯৮০ সালে। টানা ৫৪ বছর ধরে আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট এই আয়োজন করে আসছে। এটি এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী সুন্নি মুসলমানদের কাছে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত।