স্টাফ রিপোর্টার: জেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। অগ্রহায়ন মাসের শুরু থেকে ধান কাটার ধুম পড়লেও দাম নিয়ে হতাশায় পড়েছেন কৃষকরা।
বাজারে ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। অথচ জমিতেই কৃষকের খরচ হয়েছে মণ প্রতি ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বর্গা চাষীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৯ হাজার ৭৭৪ হেক্টর জমিতে ২২ লাখ ৪ হাজার ৯০৮ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে, ১ লাখ ৬৬৩ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৪৭ হেক্টর, উফশি ৮৩ হাজার ১১৭ হেক্টর, স্থানীয় ১৭ হাজার ৪৯৯ হেক্টর। বোনা আমানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩২ হাজার ৩৭ হেক্টর জমিতে ৩৮ হাজার ১১২ মেট্রিক টন। এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ৩১ হাজার ৬৭৬ হেক্টর জমিতে।
টাঙ্গাইলে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। এজন্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে কোন হিসেব করা হয়নি।
সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলে ব্রি-ধান ৬২, ৪৯, ৫১, ৫২, ৪১, ৪০, ৩৯, ৩৩, ৩৪, ২৯, ৩০, ২২, বিনা-৭, বিআর-১১ ও পাইজাম উৎপাদন হয়ে থাকে। এছাড়া স্থানীয় জাতের পাট জাগ, আলোয়া, কালিজিরা, নাইজারশাল ইত্যাদি ধান আবাদ করেন কৃষকরা। কৃষকরা হাইব্রিডের বিভিন্ন প্রজাতির ধানও চাষ করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হাসিম বলেন, আশা করা হচ্ছে: এবারের ফলন ভাল হবে। সার্বিক সহযোগিতায় এবার ধানের কোন ক্ষতি হয়নি। আগামী মৌসুম থেকে বিনা সার ও ব্রি-ধান ৬২ ধান চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে। কারণ এ ফসলে জিংক রয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি উপজেলায় ৪০ একর করে এর বীজ সংগ্রহ করা হয়। আর এই বীজ সংগ্রহের মধ্য দিয়ে এ দু’টি ফসলের বিস্তার ঘটাবে।
সরজমিনে এনায়েতপুর, বৈল্যা, গালা, মাগুরাটা, সদুল্লাপুর এলাকা ঘুওে দেখা গেছে, সেখানে কৃষকরা ধান কাটছেন। অনেক জমিতে ধানকাটা শেষও হয়েছে।
কৃষকরা জানান, তাদের জমিতে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে সব জিনিসের দাম বেশি এবং ধানের দাম কম। ধানের দাম কম থাকায় তাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে।
এনায়েতপুরের ধানচাষী বিভাষ মিয়া জানান, তিনি প্রতি বছরই ধান চাষ করেন। এ বছর তিনি ১০ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে মণ প্রতি ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা।
সদুল্লাপুরের আবীর হোসেন জানান, তিনি এ বছর ৩৬ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেছেন। তাদের ওখানে কালিজিরা, চিনি সাগর, পাটজাগ, বিআর-১১ ধানের চাষ হয়। তার তিনটি জমিতে প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। জমিতে ফলনও হয়েছে ভাল। বাজারে এখন সব জিনিসের দাম বেশি। শুধুমাত্র ধানের দাম কম। তারা ধানের ন্যায্য দাম নির্ধারণ করার দাবি জানান।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।