অগ্রসর রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে বর্ণনা করে এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সম্মিলিতভাবেই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর জাতীয় সংসদ ভবন কার্যালয়ে জার্মানীর সফররত দুই সংসদ সদস্য হ্যান্স-পিটার ইয়ুল এবং থর্সটেন ফ্রেই’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহবান জানান।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর পেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় এ দুটি নির্মূলে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।
তাঁর সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টিতে সরাসরি জনগণের দোরগোড়ায় যাচ্ছি এবং আমাদের উদ্যোগের সঙ্গে অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দসহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার এ বিষয়ে জনগণের কাছ থেকেও আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছে এবং জনগণ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দূর করতে সর্বান্তকরণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করছে।
প্রধানমন্ত্রী এ মাসেই তাঁর জার্মানীর মিউনিখে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগদানের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই সম্মেলন অনুষ্ঠান অত্যন্ত জরুরি।
তাঁর সরকারের সময়ে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দ্রুত দেশের উন্নতি ঘটাতে চাই এবং যে জন্য আমাদের বিনিয়োগ একান্তভাবে কাম্য।’ এ সময় দেশে আরো জার্মান বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ যাতে অণœ, বস্ত্র, বাসস্থান ও স্বাস্থ্যসেবা পায় সেটা নিশ্চিত করাই তাঁর সরকারের মূল লক্ষ্য।
দারিদ্র্যকে উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের সময়োপযোগী উদ্যোগে দেশে অতি দারিদ্র্যের হার কমে বর্তমানে ১২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দারিদ্র্যকে তাঁর সরকার আরো কমিয়ে আনতে চায় ।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নতির দিকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী গত অর্থবছরে জিডিপি ৭ দশমিক ১ শতাংশ ছিল বলেও উল্লেখ করেন।
বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী জার্মানীর এমপিদ্বয়কে বাংলাদেশে স্বাগত জানান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানীই বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিলো বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বৈঠকে জার্মানীর সংসদ সদস্যদ্বয় মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনকে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অতি গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে বলেন, সেখানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ থাকবে।
বর্তমান বিশ্বে অভিবাসন সমস্যাটিও অত্যন্ত প্রকট বলে জার্মান আইন প্রণেতারা উল্লেখ করেন। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাািজক উন্নয়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম এবং ঢাকায় জার্মানীর রাষ্ট্রদূত ড. টমাস প্রিন্জ উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।