বর্তমানে এই শহরের জনসংখ্যা আড়াই হাজারের কাছাকাছি। ৪২টি দেশের বাসিন্দারা এখানে মিলেমিশে বসবাস করেন। এদের মধ্যে ৩০ শতাংশ ভারতীয়। সুযোগ-সুবিধার বিচারে পৃথিবীর বহু বড়ো শহরকেই টেক্কা দিতে পারে অরোভিল। এখানে স্কুল, হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আধুনিক জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় পরিষেবা মজুত রয়েছে। সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র নিয়মনীতি মেনে পরিচালিত হয় এই শহর, যার ফলে অরোভিলে টাকাপয়সার কোনও প্রচলনই নেই।
কিন্তু তাহলে কীভাবে চলে অরোভিলের বাসিন্দাদের জীবন? আসলে ‘সেবার বদলে সেবা’ নীতি অনুসরণ করে এই শহর, যা আদপে প্রাচীন বিনিময় প্রথারই একটি আধুনিক সংস্করণ। এখানে থাকা, খাওয়ার জন্য কোনও পয়সাই লাগে না। বরং নিজের সাধ্যমতো ‘সেবা’ দিয়ে প্রত্যেকে শহরের উন্নয়নে নিজস্ব অবদান রাখেন। ‘সেবা’ বলতে মূলত তেল, সাবান, ধূপকাঠি তৈরি-সহ অন্যান্য কুটির শিল্পে হাত লাগানো। এইভাবে উৎপাদিত দ্রব্য অরোভিল ফাউন্ডেশন দেশের অন্যান্য অংশে বিক্রির বন্দোবস্ত করে। সেই থেকে যা আয় হয়, তা শহরের বাসিন্দাদের জীবন নির্বাহ, এবং শহরের উন্নয়নে কাজে লাগানো হয়। নিজেদের শ্রমের বিনিময়ে অরোভিল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সামান্য কিছু বেতনও পান নাগরিকরা। কিন্তু সেই উপার্জিত অর্থ অরোভিলের চৌহদ্দির মধ্যে খরচ করার প্রয়োজন পড়ে না। ভারত সরকারও এই শহরকে এবং এর অভিনব অর্থব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।