কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) নির্বাচিত প্রথম নারী মেয়র ডা. তাহ্সিন বাহার সূচনা সিটি মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লা নগর ভবনে এসে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মেয়র নগর ভবনে গেলে তাকে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বরণ করেন নগর ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ সময় কুসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হাবিবুর আল আমিন সাদী, প্রধান নির্বাহী ছামছুল আলমসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। পরে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের নিকট থেকে দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর নতুন মেয়র ডা. তাহ্সিন সাংবাদিকদের বলেন, আজ থেকে একটি স্মার্ট নগর গড়ে তোলার কাজ শুরু হলো।
মেয়র ডা. তাহ্সিন বাহার সূচনা কুমিল্লা সদর আসনের টানা চারবারের সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের জ্যেষ্ঠ কন্যা। তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জাগ্রত মানবিকতার নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেয়া ডা. তাহ্সিন শিক্ষাজীবন থেকে তার বাবার সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি মানবিক সেবাজনিত কাজেও নগরীতে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন।
মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের পর ডা. তাহ্সিন সাংবাদিকদের আরও বলেন, আমার জীবনের বড়ো ধরনের দায়িত্বের সূচনা হলো আজ। সিটি নির্বাচনে আমার প্রতিশ্রুতি ছিল একটি দুর্নীতিমুক্ত নগর গড়ে তুলব। নগরবাসী আমার উপর আস্থা রেখেছেন, আমাকে বিপুল ভোটে জয়ী করেছেন। আমি নগরবাসীর কল্যাণে সর্বদা কাজ করব। এতে প্রথম গুরুত্ব থাকবে নগরীর যানজট নিরসন করা। দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে নগরের সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।
এদিন দুপুর ১২টার দিকে তিনি তার মা মেহেরুন্নেছা বাহারকে সঙ্গে নিয়ে নগর উদ্যানের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, কুমিল্লা নগরীকে পরিকল্পিতভাবে স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়ে তুলব। সেই লক্ষ্যে সবাইকে নিয়ে কাজ করব। আজ থেকে ৪০ বছর আগে আমার বাবা কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান হন। সেটি এখন সিটি করপোরেশন। বাবা টানা দুইবার পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৮ সাল থেকে টানা চারবারের এমপি। তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কুমিল্লাকে ঢেলে সাজাব।
গত ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত কুসিকের মেয়র পদে উপনির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সমর্থিত বাস প্রতীকের প্রার্থী ডা. তাহ্সিন বাহার সূচনা প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে ৪৮ হাজার ৮৯০ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি এখানে প্রথম নারী মেয়র হলেন। ডা. তাহ্সিন নিজেকে নগর মাতা নয়, নগরকন্যা হিসেবে নারীসহ অসহায় দুঃস্থ মানুষের পাশে থেকে সর্বস্তরের নগরবাসীর সেবায় নিয়োজিত থাকার ঘোষণা দেন।