ব্যাংকে ডাকাতি এবং পুলিশ, সেনাবাহিনীর চেকপোস্টে আক্রমণ করে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। অনেকে তাদের এই ডাকাতি ও হামলার ঘটনাকে অর্থ সংগ্রহের কারণ হিসেবে দেখছে। তবে সম্প্রতি জানা গেছে, পার্বত্য অঞ্চল দখলই মূল উদ্দেশ্য কেএনএফের।
শনিবার (৬ এপ্রিল) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে পাহাড়ের শান্তির জন্য হুমকি হয়ে ওঠা সংগঠনটি। রাত ১২টার কাছাকাছি সময়ে ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে সামনে এসেছে এমনই দাবি সংবলিত একটি পোস্ট।
দেশের বিজ্ঞ মহল, বিশ্লেষক ও সাংবাদিকগণের জ্ঞাতার্থে এবং টকশোর আলোচনায় বিশেষ সুবিধার্থে পোস্টটি করা হয়েছে দাবি করে তাতে বলা হয়, আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে নয়টি উপজেলা নিয়ে নিজেদের পৃথক রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে এলেও এখন সাতটি উপজেলা নিয়ে ‘স্বশাসিত পরিষদ’ চায় কেএনএফ, যার নাম হবে ‘কুকি-চিন টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল’(কেটিসি)।
ছয় দফা দাবি সংবলিত পোস্টটিতে বলা হয়, দাবিকৃত অঞ্চলে শাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর সেখানকার ভূমি ও পর্যটন বিষয়ক সংক্রান্ত সব কর্মকাণ্ডের সর্বময় ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে কেটিসিকে দিতে হবে সরকারের। এছাড়া দাবি অনুযায়ী, কেটিসি’র অঞ্চলে পুলিশ বাহিনীর নিয়োগ প্রদানসহ সব ক্ষমতা কেএনএফেরই থাকবে।
এছাড়া কেএনএফের অতীতের সব হামলা ও অন্যান্য আইন লঙ্ঘনকারী কর্মকাণ্ডকে তাদের আন্দোলন বলে দাবি করে কেএনএফ। সংগঠনটির সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি করা হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
পরবর্তী দফায় দাবি করা হয়েছে, যেন বিভিন্ন সময়ে পার্শ্ববর্তী অঞ্চল তথা ভারতের মিজোরামে পালিয়ে যাওয়া বম জনগোষ্ঠী এবং মিয়ানমারের পালেতুয়া এলাকায় পালিয়ে যাওয়া খুমি ও ম্রো জনগোষ্ঠীর লোকজনকে দেশে ফিরিয়ে এনে পুনর্বাসনের সুযোগ ও সুব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
আর পোস্টের সবশেষ দফায় নিজেদের সশস্ত্র বাহিনী গঠনের সুযোগ দাবি করা হয়েছে কেএনএফের পক্ষ থেকে, যার নাম হবে কুকি-চিন আর্মড ব্যাটেলিয়ন (কেএবি)।
ফেসবুক পোস্টটি থেকে জানা যায়, বান্দরবানে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী এ সশস্ত্র সংগঠনটির সঙ্গে দুই দফায় মুখোমুখি সংলাপ হয় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির।
ঈদের পর এপ্রিলের মাঝামাঝি আরেক দফায় উভয়পক্ষের সংলাপে বসার কথা থাকলেও হঠাৎ গত মঙ্গলবার বান্দরবানের রুমায় ও বুধবার থানচিতে দফায় দফায় সশস্ত্র হামলা চালায় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। তিন ব্যাংকে লুটপাট চালানোর পর অপহরণ করে নিয়ে যায় সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ম্যানেজারকে। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাবের মধ্যস্থতায় রুমা বাজারে নেজাম উদ্দিন নামে ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিলেও ওইদিনই রাতে দুই দফায় থানচি ও আলীকদমে সংগঠনটির পৃথক দুটি গ্রুপ চড়াও হয় পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যদের ওপর।