অগ্রসর রিপোর্ট : অস্ট্রেলিয়ার পরে আফগানিস্তানকেও বিশাল ব্যবধানে হারাল ভারত। বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে রোহিত শর্মার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩৫ ওভারে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আট উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে ভারত। এর ফলে বাংলাদেশের পর ভারতের কাছেও বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানের দেওয়া ২৭৩ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে রোহিত শর্মার বিধ্বংসী ১৩১ রানের ইনিংসে ৯০ বল বাকি থাকেতেই দুই উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষে পৌঁছে যায় ভারত।
ভারতের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন রোহিত শর্মা ও ইশান কিষান। আজ শুরু থেকেই আফগান বোলারদের ওপর তাণ্ডব শুরু করেন রোহিত শর্মা। যার ফলে ভারত মাত্র ছয় ওভারে দলীয় অর্ধশতক তুলে নেয়।
তাণ্ডব চালানো রোহিত শর্মা আজ মাত্র ৩০ বলেই তুলে নেন নিজের অর্ধশতক। রোহিতের তাণ্ডবে ১১ ওভার ৫ বলে ১০০ রান তোলে ভারত।
দলীয় শতক পার হয়ে গেলেও আফগান বোলাররা হাজার চেষ্টা করেও ভারতের ওপেনিং জুটি ভাঙতে পারছিলেন না। অবশেষে আফগান লেগ স্পিনার রাশিদ খান সফল হন এই জুটি ভাঙতে।
রাশিদ খানের বলে আউট হয়ে ফিরে যান ইশান কিষান। যার ফলে ১৫৬ রানে ভাঙে ভারতের ওপেনিং জুটি। ৪৭ বলে ৪৭ রান করে ফেরেন ইশান।
প্রথম উইকেট পরে গেলেও থামেননি রোহিত। ৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করার পর মাত্র ৬৩ বলেই করেন সেঞ্চুরি। যার মধ্যে রয়েছে ১২টি চারের মার ও ৪টি ছয়ের মার।
সেঞ্চুরি করে অবশেষে ১৩১ রানে থামেন রোহিত। ১৩১ রানে তাকে ফেরান লেগ স্পিনার রশিদ খান। এর আগে ইশান কিষানকেও ফিরিয়েছেন তিনি। মাত্র ৮৪ বলে ১৩১ রান করেন তিনি।
রোহিতের বিদায়ের পর বিরোট কোহলির ৫৫ রান আর শ্রেয়াস আইয়ারের ২৫ রানে ৯০ বল বাকি থাকতেই দুই উইকেট হারিয়ে লক্ষে পৌঁছে যায় ভারত।
এর আগে ভারতের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। ব্যাটিংয়ে নামেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। এই দুই ওপেনার মিলে শুরু থেকেই দেখেশুনেই খেলতে থাকেন। ম্যাচের ৩ ওভার ৪ বলের সময় এলবিডব্লিউর আবেদন করে ভারত। আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় ভারত। কিন্তু রিভিউ বিফলে যায়। জীবন পান ইব্রাহিম জাদরান। তবে এরপর আর নিজের ইনিংস বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি তিনি।
দলীয় ৩২ রানে জাসপ্রিত বুমরাহর শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। যার ফলে ৩২ রানেই ভাঙে আফগানদের ওপেনিং জুটি। ২৫ বলে ২১ রান করে ফিরে যান জাদরান।
জাদরানের বিদায়ের পর রহমত শাহকে নিয়ে জুটি বাঁধেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। কিন্তু দলীয় ৬৩ রানে শার্দুল ঠাকুরের শিকার হয়ে ফিরে যান রহমানউল্লাহ গুরবাজ। গিুরবাজের পর ফিরে যান রহমত শাহও। দলীয় ৬৩ রানেই ৩ উইকেট হারায় আফগানরা।
৬৩ রানে তিন উইকেট পড়ে যাওযার পর শঙ্কা জাগে একেপেশে ম্যাচের। কিন্তু তখনই গল্পে নতুন মোড়। তিন উইকেট পড়ে যাওযার পর জুটি গড়েন হাশমতউল্লাহ শাহিদি ও আজমতুল্লাহ ওমরজাই। এই দুই ব্যাটারের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে বিপর্যয় কাটিয়ে বড় স্কোরের দিকে যাচ্ছে আফগানরা।
হাফ সেঞ্চুরির পর আজমতুল্লাহ ওমরজাইভারতের বিপক্ষে আজ ৬২ বলে ৫০ রান করেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই। যার মধ্যে রয়েছে একটি চার ও তিনটি ছয়ের মার।
আজমতুল্লাহর পর ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদিও। ৫৮ বলে ৫০ রান করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে ৫টি চারের।
এই দুই ব্যাটারের জুটিতে যখন স্বপ্ন দেখছিল আফগানিস্তান। তখনই ঘটে ছন্দপতন। দলীয় ১৮৪ রানে হার্দিক পান্ডিয়ার শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান আজমতুল্লাহ ওমরজাই। ৬৯ বলে ৬২ রান করে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ভাঙে ১২১ রানের জুটি।
আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের বিদায়ের পর মোহাম্মদ নবীকে নিয়ে জুটি বাঁধেন শাহিদি। দলের বিপর্যয় কাটিয়ে নিজেও ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে।
কিন্তু সেঞ্চরির আশা জাগিয়েও কুলদ্বীপ যাদবের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেলেন তিনি। ৮৮ বলে ৮০ রান করেচেন তিনি। তার বিদায়ে আবারও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে আফগানিস্তান।
তার বিদায়ের পর দুই রান করে সাজঘরে ফিরে যান নাজিবুল্লাহ জাদরান। এরপর মোহাম্মদ নবীও বেশি সময় থাকতে পারেননি ক্রিজে। ২৭ বলে ১৯ রান করে তিনিও ফিরে যান সাজঘরে।
এরপর রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান মিলে গড়েন ২৬ রানের জুটি। ১২ বলে ১৬ রান করে রশিদ খানের বিদায়ের পর ভাঙে এই জুটি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭২ রান করে আফগানিস্তান।