অগ্রসর রিপোর্ট : এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই চমক দেখালো আফগানিস্তান। উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে তারা। লঙ্কানদের বিপক্ষে পাওয়া জয়টি আফগানিস্তানের জন্য বড় বিষয় না হলেও ৫৯ বল হাতে রেখে তারা যেভাবে দাপট দেখিয়ে জিতেছে তা নিশ্চিতভাবেই অন্য যেকোনো দলের জন্য ভীতি হতে পারে। প্রথম ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার পথ অনেকটাই সুগম করেছে আফগানরা।
১০৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও হজরতউল্লাহ জাজাই। এই দুজনে মিলেই যোগ করেছেন ৮৩ রান। জাজাই-গুরবাজের জুটি যখন ভাঙেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ততক্ষণে ম্যাচ নিজেদের হাতে নিয়ে নিয়েছে আফগানিস্তান। জয়ের মাত্র ৩ রান দূরে রান আউট হয়ে ফিরেছেন ১৫ রান করা ইব্রাহীম জাদরান। এরপর জাইজাইয়ের সঙ্গে যোগ দিয়ে আফগানদের জয় এনে দিয়ে মাঠ ছাড়েন নাজিবউল্লাহ জাদরান। শেষ পর্যন্ত ৩৭ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন জাজাই।
এর আগে এই ম্যাচে টসে জিতে আগে বোলিং নেয় আফগানিস্তান। বল হাতে নেমেই দুই ওভারের মধ্যে লঙ্কানদের তিন উইকেট তুলে নেন আফগান বোলাররা। সেই চাপ থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি এশিয়া কাপের এবারের আসরের আয়োজকরা।
এর মধ্যে প্রথম ওভারেই পর পর দুই বলেই কুশাল মেন্ডিস ও চারিথ আশালাঙ্কার উইকেট তুলে নেন আফগান পেসার ফজল হক ফারুকি। দ্বিতীয় ওভারে এসে পাথুম নিশাঙ্কাকে ইনসাইড এজ করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন নাভিন উল হক। এই আউটটি নিয়েই শুরু হয়েছিল ধোঁয়াশা। আফগান ফিল্ডারদের জোড়ালো আবেদনে আউট দেন আম্পায়ার। যদিও রিভিউ নেন লঙ্কান এই ব্যাটার। টিভি রিপ্লেতে কোনো স্পাইক না পাওয়া গেলে নিজ নিজ জায়গায় ফিরে যান বোলার ও ব্যাটাররা।
যদিও সবাইকে অবাক করে দিয়ে নিশাঙ্কাকে আউট দেন থার্ড আম্পায়ার। সাইড বেঞ্চে বসে থাকা চামিকা কারুনারত্নে প্রকাশ্যেই দুই হাত ছড়িয়ে নিজের হতাশা ব্যক্ত করেন। সবাই অবাক হলেও আফগান শিবিরে এই উইকেট উৎসবের মুহূর্ত এনে দিয়েছে। মাত্র ৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর লঙ্কানদের হাল ধরেন দানুশকা গুনাথিলাকা ও হাসারাঙ্গা। দলীয় ৪৯ রানে গুনাথিলাকা ফিরে গেলে আবারও চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। মুজিব উর রহমানের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে তিনি উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন করিম জানাতের কাছে ক্যাচ দিয়ে।
হাসারাঙ্গাকেও বিদায় করেছেন মুজিব। ৮ বল খেলে মাত্র ২ রান করে তিনি মাঠ ছেড়েছেন। লঙ্কান দলপতি দাসুন শানাকা কোনো রান না করেই মোহাম্মদ নবির কুইকার ডেলিভারিতে রহমানউল্লাহ গুরবাজের হাতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। পরের দুই উইকেটের কৃতিত্ব দিতে হবে আফগান ফিল্ডারদের। একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকা ভানুকা রাজাপাকশে রান আউট হয়েছেন নবির দারুণ থ্রোতে। তার ব্যাট থেকে আসে দলীয় সর্বোচ্চ ২৯ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। পরের বলেই মাহিশ থিকশানাও হয়েছেন রান আউট। এবার গুরবাজের থ্রোতে উইকেট ভাঙেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
মাথিশা পাথিরানাকে বেশিদূর এগোতে দেননি নবি। ব্যক্তিগত ৫ রানে সুইপ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। শেষ দিকে দ্রুত কিছু রান করেছেন চামিকা। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন দিলশান মাদুশঙ্কা। ৩১ রান করা চামিকাকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কার ইনিংস গুটিয়ে দেন ফারুকি। চামিকার ব্যাট থেকে আসে ৩৮ বলে ৩১ রানের ইনিংস।