অগ্রসর রিপোর্ট :ময়মনসিংহে অভিযানে গ্রেপ্তার চার জঙ্গি ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে জানিয়েছে র্যাব। তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় অর্থের সংস্থানের জন্য ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা নেয় বলে জানিয়েছে এলিট ফোর্সটি।
শনিবার ভোরে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার খাগডহর এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব-১৪ এই চারজনকে আটক করে। এ সময় র্যাবের সঙ্গে জঙ্গিদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
দুপুরে ময়মনসিংহে র্যাব-১৪ এর সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। এসময় ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ অধিনায়ক লে. কর্নেল রোকনুজ্জামান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আটক চার জঙ্গির পরিচয় নিশ্চিত করেছে র্যাব-১৪। তারা হলেন জেএমবির সক্রিয় সদস্য ময়মনসিংহের জুলহাস উদ্দিন কাদেরী ওরফে মেহেদী, মো. আলাল (ইসহাক), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোহাম্মদ রোবায়েদ আলম, রংপুরের মো. আবু আইয়ুব ওরফে খালিদ। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, তিন রাউন্ড গোলাবারুদ, আটটি বোমাসদৃশ বস্তু, চারটি ব্যাগ, দরজা ও লক ব্রেকিং সরঞ্জামাদি, একটি মাটির চুলা এবং একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে আদায়কৃত বাধ্যতামূলক ইয়ানত জঙ্গিদের অর্থের মূল উৎস। এছাড়া জঙ্গিরা বিভিন্ন সময় লুট, ছিনতাই ও ডাকাতি ইত্যাদির মাধ্যমেও অর্থ যোগাড় করে। এর মধ্যে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি ও লুটসহ বিভিন্ন অর্থ ছিনতাইয়ের ঘটনা উল্লেখযোগ্য।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির এহসার সদস্য। এই স্তরের সদস্যরা বিভিন্ন জঙ্গি অপারেশনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে থাকে। তারা সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়। এ বিষয়ে জামালপুরের একটি গোপন আস্তানায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পর র্যাব জানায়, বাছাইকৃত ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ জঙ্গি দল গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ময়মনসিংহের কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও, স্বর্ণালঙ্কার দোকান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তারা একটি টার্গেট নির্ধারণ করেছে। জল ও স্থলপথের সমন্বয় ঘটিয়ে ঘটনাস্থলে আসার পরিকল্পনা করা হয়। তারা এখন অর্থ সংকটে পড়ে ডাকাতিসহ নানা অপরাধ করে চলেছে।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুই হাজার ৬১৭ জন বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এরমধ্যে এক হাজার ৩৭৭ জন জেএমবি সদস্য। হলি আর্টিজান পরবর্তী সময়ে র্যাবের কর্মতৎপরতায় এক হাজার ৪৫৫ জঙ্গি সদস্য গ্রেপ্তার হয়, এর মধ্যে ৮০৭ জন জেএমবি সদস্য। এছাড়া অভিযানে নিহত হয় বেশ কয়েকজন জঙ্গি সদস্য।
খন্দকার আল মঈন বলেন, বর্তমানে জঙ্গিবাদ বাংলাদশে একটি পরাজিত শক্তি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর্যুপরি জঙ্গিবিরোধী অভিযান ও কর্মতৎপরতার ফলে জঙ্গিদের তৎপরতা প্রায় শূন্যের কোঠায়। তারপরও র্যাব আত্মতুষ্টিতে ভুগছে না। আমরা আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখেছি।