অগ্রসর রিপোর্ট :মাহমুদউল্লাহর ব্যাট ছুঁয়ে বলটা সীমানায় যায়নি তখনও। কিন্তু তার উদযাপন শুরু হয়ে যায়। ৫০তম টেস্টে পঞ্চম টেস্ট শতকের উদযাপন। দৌড়ে লাফ দিয়ে শূন্যে ঘুষি। এরপর ব্যাট-হেলমেট খুলে সিজদাহ। ব্যাট হাতে নিয়ে ড্রেসিংরুমের দিকে ইশারা করলেন। তাকালেন পরিষ্কার আকাশে। নিজের বুকে দুইবার হাত রেখে হয়তো ইঙ্গিত করছিলেন, ‘এরকমটাই হওয়ার কথা ছিল আমার সঙ্গে। সবকিছু ওপরে লেখা থাকে।’
বছরখানেক আগের কথা। মাহমুদউল্লাহকে টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে বলেছিলেন জাতীয় দলের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, লাল বলের কেন্দ্রীয় চুক্তিতেও রাখা হয়নি। সেই মাহমুদউল্লাহকে এবার জিম্বাবুয়ে সফরের দলেও রাখা হয়নি। তামিম ও মুশফিকের ইনজুরি ভাবনায় তাকে দলে নেন নাজমুল হাসান পাপন। তার সিদ্ধান্তেই বাজিমাত। মাহমুদউল্লাহর অনবদ্য ১৫০ রানে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের রান ৪৬৮। ব্যাকআপ নয় মাহমুদউল্লাহ এ টেস্টে হয়ে উঠলেন ব্যাকবোন।
শুধু মাহমুদউল্লাহই নয়, দ্বিতীয় দিন ব্যাটিং কারিশমা দেখালেন তাসকিন আহমেদ। ব্যাট হাতে অনবদ্য ৭৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। তাদের দুজনের নবম উইকেট জুটিতে আসলো ১৯১ রান। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়লেও অল্পের জন্য বিশ্ব রেকর্ড গড়া হয়নি। তাতে অবশ্য আফসোস থাকার কথা নয় কারোরই। দলের পুঁজিকে চূঁড়ায় নিয়ে যাওয়ার আনন্দ দুজনই পেয়েছেন।
মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থেকেছেন ক্যারিয়ার সেরা ১৫০ রানে। ২৭৮ বলে ১৭ চার ও ১ ছক্কায় করেন এ রান। এর আগে ১৪৬ করেছিলেন নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। তাসকিনের এটি প্রথম প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হাফ সেঞ্চুরি। স্থির হয়ে খেললে সেঞ্চুরিও পেয়ে যেতে পারতেন। গড়া হতো বিশ্বরেকর্ডও। কিন্তু নিজের আনন্দে খেলেছেন ২২ গজে। ১৩৪ বলে ১১ বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল ইনিংসটি।
জবাব দিতে নেমে জিম্বাবুয়ের শুরুটাও ছিল ভালো। উদ্বোধনী জুটিতে মিল্টন শুম্বা ও কাইতানো ৬১ রান তুলে নেন। মুমিনুল চার বোলার ব্যবহার করলেও উইকেটের দেখা পাচ্ছিলেন না। অবশেষে সাকিব দ্বিতীয় স্পেল করতে এসে ব্রেক থ্রু এনে দেন। বাঁহাতি ব্যাটম্যান মিল্টন শুম্বাকে এলবিডব্লিউ করিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার।
৪১ রান করা শুম্বা সাকিবের বলে সুইপ করতে গিয়ে বল মিস করেন। এরপর আর কোনও উইকেট হারায়নি স্বাগতিকরা। ঝড়ো গতিতে ব্যাটিং করে ব্রেন্ডন টেইলর ৩৩ রান করেন। কাইতানোর ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। দ্বিতীয় দিন শেষে তাদের রান ১ উইকেটে ১১৪। স্বাগতিকরা পিছিয়ে ৩৫৪ রানে। ফলো অন এড়াতে এখনও করতে হবে ১৫৪ রান। মাহমুদউল্লাহ-তাসকিনের ব্যাটে বাংলাদেশ রাঙিয়েছে দ্বিতীয় দিন। এবার বোলারদের পরীক্ষার পালা।