অগ্রসর রিপোর্ট : মোংলা, পায়রা, চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও আধুনিকায়ন এবং সেখানে অত্যাধুনিক স্ক্যানার মেশিন বসানোর নির্দেশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, ‘যে মালামাল আসবে সেগুলো যেন স্ক্যান করা হয়। স্ক্যানার নষ্ট হয়ে আছে এটা বললে হবে না।’
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফিং করেন।
একনেক সভায় চার হাজার ৪৬০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলতি সাতটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ‘যেখানে নতুন বন্দর করছি, মোংলা, পায়রা আসছে, আর চট্টগ্রাম বন্দর তো আছে, সেখানে লেটেস্ট (আধুনিক) স্ক্যানার যেন বসানো হয়। স্ক্যানার নষ্ট হয়ে আছে, কাজ করে না এসব বললে হবে না। এখানে লেটেস্ট স্ক্যানার লাগাতে হবে এবং আধুনিকায়ন করতে হবে।’
একনেক সভায় মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এর দ্বারা বন্দরে নিরাপদ চ্যানেল তৈরি, সমুদ্রগামী জাহাজ সুষ্ঠুভাবে হ্যান্ডলিং ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জরুরি উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা হবে।
৭৬৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০১৯ থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় একটি পাইলট মাদার ভেসেল সংগ্রহ, দুটি টাগবোট একটি সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ ভেসেল সংগ্রহ করা হবে। এছাড়াও একটি সার্ভে অ্যান্ড রিসার্স ভেসেল, একটি বয়া লেইং ভেসেল, একটি প্রিন্টার ও একটি ফ্যাক্সসহ কম্পিউটার এবং ফটোকপি মেশিন কেনা ইত্যাদি কাজ করা হবে। বন্দরসমূহে কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে টার্মিনাল সম্প্রসারণ এবং এ সম্পর্কিত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাদি বৃদ্ধির বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘নেপাল-ভুটান-আসামের সঙ্গে নৌ যোগাযোগ বাড়াতে চান প্রধানমন্ত্রী। ভারতের আসাম এবং নেপাল ও ভুটানসহ উত্তরের দিকের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের নৌপথে যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে বলেছেন তিনি।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘উত্তরের দিকে যেসব দেশ আছে, যেমন নেপাল, ভুটান, এমনকি আসাম- দেশ না হলেও বড় দেশের অংশ। তাদের সঙ্গে নৌপথে চলাচলটা আরও সহজ করা দরকার। ব্যবসা-বাণিজ্যে আমরা নৌপথের দিকেও নজর দিচ্ছি। আপনারা জানেন, ব্রহ্মপুত্র আমাদের বিশাল নদী। প্রধানমন্ত্রী বলছিলেন, খোঁজ-খবর নেন তাদের সঙ্গে কথা বলেন।’
নদী খননের সময় যাতে পাড় না ভাঙে সে দিকে সতর্ক থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার বক্তব্য তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ড্রেজিং আমরা করছি অনেক জায়গায়। ড্রেজিংটা নদীর পাড়ের দিকে করবেন না। নৌ-মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবকে তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে বি ভেরি কেয়ারফুল (খুব সতর্ক থাকা), যাতে পাড় না ভাঙে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাংলাদশেরে সীমান্তর্বতী জেলারগুলো সঙ্গে উন্নতমানের সড়ক নির্মাণ করা হবে হবে। তবে কবে এর কাজ শেষ হবে সেটা তিনি জানাননি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলনে, আমরা আন্তঃজলো সড়ক ফোরলনে করছি। গ্রামের সড়ক উন্নয়ন করছি। এখন আমরা সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করবো। এর জন্য আমরা আস্তে আস্তে প্রকল্প নিচ্ছি।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘সীমান্ত সড়ক নির্মাণ: ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলা অংশ (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণসহ ভূমি উন্নয়ন (প্রথম সংশোধন)’ ও ‘রাজশাহী মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণার্থে নর্দমা নির্মাণ, তৃতীয় পর্যায় (প্রথম সংশোধিত)’; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘মোংলা বন্দরের জোরদারকরণ’ প্রকল্প, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক স্ট্রেংদেনিং প্রজেক্ট আন্ডার পিজিসিবি (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্প এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘সিলেট, লালমনিরহাট ও বরিশাল ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি স্থাপন’ প্রকল্প।