অগ্রসর রিপোর্ট : ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটসম্যান আন্দ্রে ফ্লেচার ও জনসন চার্লসের ভয়ংকর ব্যাটিং নৈপুন্যে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল সিলেট থান্ডার। আজ টুর্নামেন্টের ১৫তম ম্যাচে সিলেট ৮০ রানে হারায় খুলনা টাইগার্সকে। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৩২ রানের পাহাড় গড়ে সিলেট থান্ডার। ফ্লেচার ৫৭ বলে অপরাজিত ১০৩ ও চার্লস ৩৮ বলে ৯০ রানের ভয়ংকর ইনিংস খেলেন। জবাবে ১৫২ রানে অলআউট হয় খুলনা। প্রথম তিন ম্যাচ জয়ের পর নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে হারলো খুলনা। ফলে ৪ খেলায় ৩ জয় ও ১ হারে ৬ পয়েন্ট খুলনার। আর ৫ ম্যাচে ১ জয় ও ৪ হারে মাত্র ২ পয়েন্ট সিলেটের।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। কারণ নিজেদের প্রথম ম্যাচেই রান চেজ করে ম্যাচ জিতেছে খুলনা। সেই সুবাদে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচেও রান চেজের পরিকল্পনা করেন মুশি। প্রথম ওভারেই সিলেট থান্ডারের প্রথম উইকেট তুলে নেন খুলনার দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড় রবি ফ্রাঙ্কলিন। ডান-হাতি ব্যাটসম্যান ২ রান করা আব্দুল মাজিদকে শিকার করেন তিনি।
এরপর ক্রিজে জুটি বাঁধেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটসম্যান আন্দ্রে ফ্লেচার ও জনসন চার্লস। শুরু থেকেই বিধ্বংসী রুপে ব্যাট চালান তারা। তাই পাওয়ার প্লে’তে ৭২ রান পায় সিলেট। আর ইনিংসের অষ্টম ওভারে ২৫ বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন চার্লস। ফ্লেচার ২৬ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
চার্লস-ফ্লেচারের ব্যাটিং ঝড়ে নবম ওভারেই সিলেটের স্কোর শতরানে পৌঁছায়। আর হাফ-সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরির দিকে ছুটতে থাকেন তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্য চার্লসের। নার্ভাস নাইন্টিতে লেগ বিফোর ফাঁদে পড়েন তিনি। ১১টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৩৮ বলে ২৩৬ স্ট্রাইক রেটে ৯০ রান করেন চার্লস। ডান-হাতি পেসার শহিদুল ইসলাম আউট করেন চার্লসকে।
চার্লস ব্যর্থ হলেও, টি-২০ ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছেন ফ্লেচার। ৫৩ বলে ১১টি চার ও ৫টি ছক্কায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান। তার সেঞ্চুরির আগে ১৭তম ওভারে সিলেটের দলীয় রান ২শ স্পর্শ করে। ফ্লেচার সেঞ্চুরির পান ১৯তম ওভারে। শেষ পর্যন্ত ফ্লেচারের ৫৭ বলে ১১টি চার ও ৫টি ছক্কায় অপরাজিত ১০৩ রানের কল্যাণে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৩২ রানের পাহাড় গড়ে সিলেট। এবারের আসরে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান। খুলনার ফ্রাঙ্কলিন ৩৭ রানে ২ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ২৩৩ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম বলেই উইকেট হারায় খুলনা। শুন্য হাতে ফিরেন আফগানিস্তানের রহমানউল্লাহ গুরবাজ। এরপর আস্কিং রেটের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলেন সাইফ হাসান ও দক্ষিণ আফ্রিকার রিলি রুশো। ৫১ বলে ৭৪ রান যোগ করেন তারা। এরমধ্যে ৩১ বলে ৫১ রান ছিলো রুশোর।
২০ বলে ২০ রান করে ফিরেন সাইফ। আর ৩২ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় ৫২ রান করেন ইনফর্ম রুশো। তাদের বিদায়ের পর দ্রুত ফিরেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও শামসুর রহমান। মুশফিক ১২ ও শামসুর ৭ রান করে ফিরেন। ১০০ রানে ৫ উইকেট হারানোয় ম্যাচ হার নিশ্চিত হয়ে যায় খুলনার। শেষদিকে ২০ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৪ রান করে খুলনাকে বড় হারের মুখ থেকে রক্ষা করেন ফ্রাইলিঙ্ক। শেষ পর্যন্ত ৯ বল বাকী থাকতে ১৫২ রানে অলআউট হয় খুলনা। সিলেটের ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিসমার স্যান্টোকি ৩৭ রানে ৩ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
সিলেট থান্ডার : ২৩২/৫, ২০ ওভার (ফ্লেচার ১০৩*, চার্লস ৯০, ফ্রাইলিঙ্ক ২/৩৭)।
খুলনা টাইগার্স : ১৫২/১০, ১৮.৩ ওভার (রৌসু ৫২, ফ্রাঙ্কলিন ৪৪, স্যান্টোকি ৩/৩৭)।
ফল : সিলেট থান্ডার ৮০ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : আন্দ্রে ফ্লেচার (সিলেট থান্ডার)।