অগ্রসর রিপোর্ট : আগামী ৩০ মে শুরু হচ্ছে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসর। ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্ব বৃহৎ এ আসর।
গত রোববার শেষ হওয়া সফরকারী পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজ থেকে ধারণা করা যাচ্ছে বিশ্বকাপটি হবে ব্যাটসম্যান সহায়ক। প্রতিটি দলেই পাওয়ার হিটার থাকায় কোন সংগ্রহই নিরাপদ নয় বলে অনেকেই ধারনা করছেন।
ওয়ানডে ক্রিকেটে অংশগ্রহনকারী দশ দলের সর্বোচ্চ ইনিংসের দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক।
ইংল্যান্ড-৪৮১/৬ (প্রতিপক্ষ-অস্ট্রেলিয়া, নটিংহ্যাম, ১৯জুন, ২০১৮)
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪৮১ রানের রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ড। এ্যালেক্স হেলসের ১৪৭ এবং জনি বেয়ারস্টোর ১৩৯ রানের সুবাদে ইংল্যান্ড প্রথম দল হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪৭৫ রানের রেকর্ড ভাঙ্গে। জয়ের জন্য ৪৮২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২৩৯ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। যা রান বিবেচনায় এক দিনের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের সব চেয়ে বড় জয় এবং অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় পরাজয়।
শ্রীলংকা-৪৪৩/৯ (প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস, আমস্টেলভিন, ৪ জুলাই ২০০৬)
ওয়ানডে ক্রিকেটে শ্রীলংকা নিজেদের সর্বোচ্চ ৪৪৩ রানের রানের ইনিংসটি খেলেছে আমস্টেলভিনে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৬ সালের ৪ জুলাই। সনত জয়সুরিয়ার ১৫৭ এবং তিলকরতেœ দিলশানের ১১৭ রানের সুবাদে তৎকালীন সময়ে সর্বোচ্চ স্কোর দক্ষিণ আফ্রিকার ৪৩৯ রানের রেকর্ডটি ভেঙ্গে ফেলে। এরপর দিলহারা ফার্নান্দো ও কুসল লোকুয়ারাচি তিনটি করে উইকেট শিকার করলে ২৪৮ রানে গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। শ্রীলংকা জয় পায় ১৯৫ রানে।
দক্ষিণ আফ্রিকা-৪৩৯/২ (প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জোহাসেনবার্গ, ১৮ জানুয়ারী ২০১৫)
লিজেন্ডারি ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্সের নৈপুন্যে ওয়ানডে ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা এক ইনিংসে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারী জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। মাত্র ৩১ বলে সেঞ্চুরি পুর্ন করা ডি ভিলিয়ার্স শেষ পর্যন্ত ৪৪ বলে ১৪৯ রানে আউট হন। এরপর হাশিম আমলা ও রিলি রুশোর সেঞ্চুরিতে প্রোটিয়ারা ৪৩৯ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৯১ রানে গুটিয়ে গেলে ১৪৮ রানে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
অস্ট্রেলিয়া ৪৩৪/৪(প্রতিপক্ষ- দক্ষিণ আফ্রিকা, জোহানেসবার্গ ১২ মার্চ ২০০৬)
ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ এসেছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০০৬ সালের ১২ মার্চ। মাত্র ১০৫ বল মোকাবেলায় রিকি পন্টিংয়ের ১৬৪ এবং এরপর এডাম গিলক্রিস্ট, মাইকেল হাসি ও সিমন ক্যাটিচের হাফ সেঞ্চুরিতে সর্বোচ্চ ৪৩৪ রানের ইনিংস গড়ে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে হার্শেল গিবসের ১৭৫ এবং অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথের ৯০ রানের সুবাদে এক বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় প্রোটিয়ারা।
ভারত-৪১৮/৫ (প্রতিপক্ষ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইন্দোর, ৮ডিসেম্বর ২০১১)
বীরেন্দার শেবাগের ১৪৯ বলে রেকর্ড ভাঙ্গা ২১৯ রানের সুবাদে ভারত ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদর সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলে। তার সাতটি বাউন্ডারি এবং পঁচিশটি ওভার বাউন্ডারির সুবাদে ভারত ৫ উইকেট হারিয়ে ৪১৮ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৬৫ রানে গুটিয়ে যায় এবং ভারত ১৫৩ রানে জয় পায় ও সিরিজ জয় করে।
নিউজিল্যান্ড-৪০২/২ (প্রতিপক্ষ- আয়ারল্যান্ড, আবেরডীন, ১ জুলাই ২০০৮)
ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (১৩৫ বলে ১৬৬) এবং জেমস মার্শালের ( ১৪১ বলে ১৬১ রান) জোড়া সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যন্ড নিজেদের সবোচ্চ ৪০২ রানের ইনিংস খেলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আবেরডীনে। জবাবে আয়ারল্যানন্ড মাত্র ১১২ রানে গুটিয়ে গেলে ২৯০ রানে জয় পায় নিউজিল্যান্ড। রান বিবেচনায় এটাই এক দিনের ক্রিকেটে কিউইদের সব চেয়ে বড় জয়।
পাকিস্তান-৩৯৯/১ (প্রতিপক্ষ-জিম্বাবুয়ে, বুলাওয়ে ২০ জুলাই ২০১৮)
এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ফখর জামানের ডাবল সেঞ্চুরির সুবাদে পাকিস্তান নিজেদের সর্বোচ্চ ৩৯৯ রান সংগ্রহ করে। ১৫৬ বল মোকাবেলায় ২৪টি বাউন্ডারি এবং ৬টি ওভার বাউন্ডারিতে জামান ২১০ রান করেন। জবাবে সাদাব খান ২৮ রানে ৪ উইকেট শিকার করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাকিস্তানের ২৪৪ রানের জয় নিশ্চিত করেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ-৩৮৯/১০ (প্রতিপক্ষ-ইংল্যান্ড, সেন্ট জর্জ, গ্রেনাডা, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯)
স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও সফরকারী ইংল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে কুইন্স পার্ক দেখেছে রান বন্যা। আগে ব্যাটিং করে জস বাটলার (৭৭ বলে ১৫০) এবং ইয়োইন মরগানের (৮৮ বলে ১০৩ রান) সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড ৪১৮ রান সংগ্রহ করে। জবাবে দারুন প্রতিরোধ গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিস গেইল (৯৭ বলে ১৬২) এবং ডোয়াইন ব্রাভো (৫৯ বলে ৬১ রান) ইংলিশ বোলারদের তুলোধুনা করে। তবে ৩৮৯ রানে থেমে যায় ক্যারিবিয় ইনিংস।
আফগানিস্তান-৩৩৮/১০(প্রতিপক্ষ-আয়ারল্যান্ড, নইদা (ভারত),১৭ মার্চ ২০১৭)
তৎকালীন অধিনায়ক আসগর আফগানের সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তান নিজেদের সর্বোচ্চ ৩৩৮ রানের ইনিংস খেলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৭ সালে। জবাবে দারুন লড়াই করে আইরিশরা। তবে রশিদ খান ৪৩ রানে ৬ উইকেট শিকার করলে ৩৪ রান হার মানতে হয় আয়ারল্যান্ডকে।
বাংলাদেশ-৩২৯/৬ (প্রতিপক্ষ-পাকিস্তান, মিরপুর,১৭ এপ্রিল ২০১৫)
২০১৫ সালে পাকিস্তান দলের বাংলাদেশ সফরের প্রথম ওয়ানডেতে তামিম ইকবাল (১৩৫ বলে ১৩২) এবং মুশফিকুর রহিমের (৭৭ বলে ১০৬) জোড়া সেঞ্চুরিতে নিজেদের সর্বোচ্চ ৩২৯ রানের স্কোর গড়ে টাইগাররা। জবাবে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লে ৭৯ রানে পরাজিত হয় সফরকারী পাকিস্তান।