যশোর প্রতিনিধি- খরার কারণে গত বছর যশোরে অনেক চাষী পানি কিনে পাট জাগ দিয়েছিলেন। চলতি বছর টানা বৃষ্টিতে খাল-বিল এখন পানিতে টইটম্বুর। ফলে জেলার চাষীদের এবার পাট জাগ দেয়া নিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। জেলার নিম্নাঞ্চলের অনেক জমিতে এখনো কোমর সমান পানি। ফলে খরচ কমাতে অনেক কৃষক পাট কেটে মাঠেই জাগ দিয়েছেন। অনেক অঞ্চলে পাটের আঁশ ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ চলছে। সব মিলিয়ে জেলায় পাট চাষীদের কর্মচঞ্চলতা বেড়েছে। তারা ভালো মূল্য পাওয়ার স্বপ্নও দেখছেন।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ১ হাজার ৬০০ হেক্টর, কেশবপুরে ৪ হাজার ৪৩০, মনিরামপুরে ৪ হাজার ৫২৫, শার্শায় ৪ হাজার ৮৯০, ঝিকরগাছায় ৩ হাজার ৮৫০, চৌগাছায় ১ হাজার ৮০, অভয়নগরে ৩০ ও বাঘারপাড়া উপজেলায় ৩ হাজার ৬৫ হেক্টর জমি রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক নিত্যরঞ্জন বিশ্বাস জানান, প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী জেলায় চলতি বছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে। উৎপাদিত পাটের প্রায় ৭৫ ভাগ কাটা ও জাগ দেয়া হয়েছে।
সরেজমিন জেলার মনিরামপুর উপজেলার খরিচাডাঙ্গা, লেবুগাতী, সাড়াডাঙ্গি ও সামান্দারতলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পাট চাষীরা এখন কাটি থেকে আঁশ ছাড়ানো ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত। অনেক চাষী বাড়ির উঠানে বা সড়কে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে আড়া বেঁধে পাট শুকাতে দিয়েছেন। অনেকে আবার সড়ক সেতুর দুই পাশের রেলিংকে পাট শুকানো কাজে ব্যবহার করছেন। কেশবপুরের কড়িয়াখালী গ্রামের পাট চাষী জামির মোড়ল জানান, বোরো মৌসুমে চাষীরা ধান উৎপাদন করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে এবার পাটের ফলন ভালো হয়েছে। তিনি আরো জানান, চলতি মৌসুমে পাট উৎপাদনে প্রতি বিঘায় সর্বোচ্চ ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘায় গড়ে ১০ মণ পাট পাওয়া যাবে। চলতি বাজারদর অনুযায়ী ১ মণ পাট ১ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হলেও সাড়ে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি হবে। পাটকাঠি বিক্রি করে ৩-৪ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। বর্তমান বাজারদর অব্যাহত থাকলে চাষীরা লাভবান হবে বলে তিনি জানান।