চট্টগ্রাম (সীতাকুন্ডু) প্রতিনিধি- সমাজ সেবার নামে অনিয়ম ও দুর্ণীতির মাধ্যমে সমাজের গলা কাটছে সীতাকুন্ডু উপজেলা সমাজ সেবা অফিস। দীর্ঘদিন ধরে অফিসে স্থায়ী কর্মকর্তা না থাকায় ইউনিয়ন মাঠ কর্মীরা অফিসে নানা অনিয়ম করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
গত ২ বছর যাবৎ স্থায়ী কর্মকর্তা ছাড়া সীতাকুন্ডু উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করছে অফিস সহকারী থেকে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মাঝে-মধ্যে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ দু-একদিন অফিস করলেও বেশীরভাগ সময় অফিসটি পড়ে থাকে অভিভাবকহীন। ফলে এ সুযোগে অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনিয়ম ও দুণীর্তির আশ্রয় নেয়। ইউনিয়ন মাঠ কর্মীরা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা গ্রহীতাদের ফাঁদে ফেলে উৎকোচ আদায় করা ইউনিয়ন মাঠ কর্মীদের দুর্ণীতির অন্যতম পন্থা বলে জানান ভোক্তভোগী লোকজন। বাশঁবাড়িয়া ইউনিয়নের বয়স্ক ভাতা গ্রহীতা কবির আহাম্মদ বলেন, অফিস খরচের কথা বলে প্রায় সময় ইউনিয়ন মাঠ কর্মী টাকা-পয়সা নিয়ে যায়। কেন, কিসের টাকা জিজ্ঞাসা করা হলে নতুন বই ও কম্পিউটার খরচের টাকা বলে উল্লেখ করেন। একইভাবে ঋনের টাকা পেতে হলে অফিসারকে ঘুষ প্রদান না করলে পাওয়া সম্ভব না বলে জানান কুমিরা ইউনিয়নের একাধিক ঋন গ্রহীতা।
এছাড়া নিবন্ধিত ক্লাবগুলো অকার্যকর হলেও অডিটে কর্মরত কর্মকর্তা টাকা দিলে সব সমস্যা দুর হয়ে যায় বলে জানা যায়। কুমিরা ইউনিয়নে ৭৬৫ জন বয়স্ক ভাতা, ১৭৬ জন বিধবা ও ১৬৮ জন প্রতিবন্ধি ভাতা এবং বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে ৫৬৯ জন বয়স্ক ভাতা, ১৭৬ বিধবা ভাতা, ৮৬ জন প্রতিবন্ধি ভাতা গ্রহীতা রয়েছে। এসব অসহায় লোকজন সমাজ সেবা অফিসের মাঠ কর্মীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আর ভাতা হতে বঞ্চিত হওয়ার ভয়ে সকল অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করে ভাতা গ্রহীতারা। অথচ আনিত এ সকল অভিযোগ মিথ্যা-বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত বলে দাবী করেন কুমিরা ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে দায়ীত্বরত সমাজ সেবা অফিসের কর্মকর্তা বদিউল আলম।
এদিকে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তা না থাকায় অভিযোগ প্রদান ও কাজে এসে যথা সময়ে কাজ করাতে পারছে না সাধারণ মানুষ। ফলে দিনের পর দিন সমস্যা থেকে যাচ্ছে, সমাধানের কূলকিনারা নেই। এ বিষয়ে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, এখনো পর্যন্ত কোনো মাঠ কর্মীর অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেনি। এরপরও অনিয়ম ও দুর্ণীতির তথ্য পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।