সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দিনকে সুনামগঞজ থেকে প্রত্যাহার কওে তাকে ওএসডি করা হয়েছে। আফসারের বিরুদ্ধে বিগত ও চলতি বোরো মৌসুমে জেলার বিভিন্ন হাওররক্ষা বাঁধের কাজে দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং ৫ কোটি টাকা কমিশন নেয়ার অভিযোগ ওঠায় তাকে শনিবার প্রত্যাহার করা হয়।
সিলেট ও সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক দায়িত্বশীল সুত্র শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জনরোশ ঠেকাতে শনিবার সন্ধ্যার পর আফসার উদ্দিন অতিগোপনে সিলেটের উদ্দেশে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস ত্যাগ করেন। তবে প্রত্যাহার ও ওএসডি করার বিষয়ে রাতে কয়েক দফা মো. আফসার উদ্দিনের মুঠোফোনে কল করলেও তিনি তা রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জ পাউবোর এ প্রকৌশলী আফসার ও সিলেট পাউবোতে থাকা তার গুরু খ্যাত অপর দুই প্রকৌশলী সহ তিন হাওর খেকো সংঘবদ্ধ হয়ে ঠিকাদার ও পিআইসিদের সহায়তায় হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত করেন। এ নিয়ে সরকারের উপর মগলে তোলপাড় শুরু হলে সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের পরিচালক বেলাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, সুনামগঞ্জে সম্প্রতি অসমাপ্ত ফসল রক্ষা বাঁধ দিয়ে বৃষ্টি ও ঢলের পানি ডুকে বোরো ফসলী প্রায় ১লাখ ৩৩ হাজার হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে গেছে। বেসরকারি হিসাবে এর কয়েকগুন বেশী পরিমাণ ফসল ডুবি হয়ে জেলার প্রায় ২০ লাখ কৃষক পরিবার মাœবেতর জীবন যাপন করছেন।
উল্লেখ যে, চলতি বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে হাওরক্ষা বাঁধের কাজে প্রজেক্টর ইমপ্লিটমেন্টেশন কমিটি (পিআইসি) ও ঠিকাদারদের মাধ্যমে প্রঅয ৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এর মধ্যে পিআইসিতে ২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও ঠিকাদারদের ৪৮ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। এত টা বরাদ্দের পর কোন কোন হাওরের ঠিকাদার কিংবা পিআইসি বাঁধের কোন রকম কাজ না করেই অর্ধেক বিল উত্তোলন করে নিজেদের আখের গুছিয়ে নেন। অপরদিকে বিল ছাড়ে গুণধর প্রকৌশলী আফসার ও তার গুরু খ্যাত সিলেটের অপর দুই প্রকৌশলী ত্রি-দানব একত্রিত হয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা আগাম ঘুষ হিসাবে পকেটস্থ করেন।