অগ্রসর রিপোর্ট : খুলনায় সেফ ইসলামী ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে উধাও হয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দুজন নেতা। গ্রাহকদের আশ^স্ত করে আত্মগোপন থেকে অডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন তারা।
অভিযুক্ত দুই নেতা হলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মুজাহিদ কমিটির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মো. মোখতার হুসাইন এবং ইসলামী যুব আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকম-লীর সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মোখতার সেফ ইসলামী ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি ও আব্দুল্লাহ আল মামুন সাধারণ সম্পাদক। তবে সম্প্রতি তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
আত্মগোপনে থাকা আব্দুল্লাহ আল মামুনের একটি অডিও বার্তা শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অডিও বার্তাটি খুলনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে।
সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের কণ্ঠে ১০ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের ওই অডিও বার্তায় বলা হয়, তারা বাধ্য হয়ে আত্মগোপন করেছেন।
এদিকে শত শত গ্রাহক নারী-পুরুষ সোনাডাঙ্গার ছোট বয়রা এলাকায় কেডিএর ৪৩ নম্বর প্লটে সোসাইটির নির্মাণাধীন ভবনের সামনে জমায়েত হয়ে টাকা ফেরত পেতে হাহাকার করছেন।
চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো. মোখতার হুসাইন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ অন্যরা গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আত্মগোপনে চলে যান।
ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকরা বলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন অডিও বার্তায় আত্মগোপনের যে কারণ দেখাচ্ছেন তা যৌক্তিক নয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে খুলনার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দেবেন বলে জানান গ্রাহকরা।
গত ২৮ নভেম্বর ১২২ জন গ্রাহক আদালতে ওই প্রতিষ্ঠানের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ওপরে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। প্রতিষ্ঠানের এবং এর কর্মকর্তাদের নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিতে কেন নিষিধাজ্ঞা দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে আদালত। গত ২ ডিসেম্বর খুলনার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. আশরাফ উদ্দিন এ আদেশ দিয়েছেন।
বিবাদীরা হলেন, সেফ ইসলামী ব্যাবাসীয় কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি মো. মোখতার হুসাইন, সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহ-সভাপতি মো. ইসমাইল হোসেন, সদস্য আব্দুর রশিদ, সদস্য এসএমএইচ ওসমান করিম ও সদস্য জিএম গোলাম মোস্তফা।
সেফ ইসলামী গ্রুপের আরও পাঁচজনসহ সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ের ১৯টি দপ্তর বিবাদী হিসেবে এ তালিকায় রয়েছে।
মামলার আরজিতে বলা হয়, সেফ ইসলামী গ্রুপ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সাধারণ মানুষের কাছে বিভিন্ন মূল্যমানের শেয়ার বিক্রি এবং এককালীন সঞ্চয়ী আমানত গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা কয়েক মাস আগে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আত্মগোপন করেছেন। ১২২ জন গ্রাহক ১০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছেন বলেও আরজিতে উল্লেখ করা হয়।