রমজান মাসে মুসলিমপ্রধান দেশের মানুষের জীবনধারা বদলে যায়। তবে এ মাসেও সেসব দেশে অনেকে ভ্রমণে যান। হয়তো কর্মস্থল থেকেই আপনাকে পাঠানো হলো এমন কোনো দেশে। সে ক্ষেত্রেও নিশ্চয়ই কেবল ‘কাজ’টুকু সেরেই চলে আসবেন না! কাজের ফাঁকে সে দেশটা একটু–আধটু ঘুরেও দেখবেন। আর যদি কেবল ঘোরাঘুরির জন্যই গিয়ে থাকেন, তাহলে তো কথাই নেই। ঈদ উদ্যাপনের জন্যও রমজানের শেষ দিকটায় অন্য দেশে বেড়াতে যেতে পারেন অনেকে। উদ্দেশ্য যা–ই হোক, মুসলিমপ্রধান দেশে এ সময় ভ্রমণে যাওয়ার আগে এই বিষয়গুলো জেনে রাখুন।
দর্শনীয় স্থান, দোকানপাট, খোলা থাকবে তো?
মুসলিমপ্রধান দেশে রমজান মাসে কর্মসময়ে বেশ পরিবর্তন আসে। ওই সব জায়গায় ভ্রমণে গেলে দর্শনীয় স্থান, দোকানপাট—এসব খোলা পাবেন কি না, পেলেও সেগুলো কোন সময় খোলা থাকবে—এসবই জেনে রাখা ভালো। একই দেশের ভিন্ন ভিন্ন স্থানেও এই বিষয়গুলো আলাদা হয়। জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান এবং আশপাশের এলাকা, যেখানে সব ধর্মের মানুষের আনাগোনা থাকে, সেগুলোতে সাধারণত রমজানের কারণে তেমন পরিবর্তন ঘটে না।
ইস্তাম্বুলের মতো ‘ট্যুরিস্ট সিটি’তে দ্রষ্টব্যের তালিকায় অনেক ধর্মীয় স্থানও আছে। এসব স্থানের অনেকগুলো আবার ভোরবেলা অর্থাৎ ফজরের নামাজের সময় ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন না। সেসব জায়গায় ঘুরতে হলে আপনাকে দুপুরের পর (কিন্তু বিকেলের আগে) যেতে হবে; অর্থাৎ জোহর এবং আসরের নামাজের মাঝের সময়টা বেছে নিতে হবে। আবার অনেক মসজিদে বিনা মূল্যে ইফতারির ব্যবস্থাও থাকে, সেখানেও যোগ দিতে পারেন।
পোশাকের বিধিনিষেধ আছে কি
মুসলিমপ্রধান দেশে রমজান মাসে কোন পোশাক পরে ভ্রমণে যেতে হবে, এর কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই। ভ্রমণে গিয়ে আপনার যে তাঁদের মতোই পোশাক পরতে হবে, তেমন কোনো বিধিনিষেধও নেই। তবে ধর্মীয় স্থানে গেলে সেখানে মার্জিত পোশাকে, নিয়মকানুন মেনে যাওয়া উচিত।
দেশে দেশে যেমন ধারা
রমজানে নানান দেশে ঘুরতে গিয়ে ইফতারের সময় বিশেষ খাবারদাবারের স্বাদ নিতে পারবেন। উপমহাদেশের ঐতিহ্য জিলাপি, মিসরের জনপ্রিয় খাবার কোশারি। মালয়েশিয়ায় পাবেন বুফে ইফতারি। বসনিয়ায় আবার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শুনতে পারবেন পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত।
হিজরি মাস চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। তাই সব দেশে একই দিনে রমজান শুরু এবং শেষ হয় না। এমনও হয়ে থাকে, এক দেশে শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ায় সেখানে ঈদ, কিন্তু অন্য এক দেশে সেদিন রমজান মাসের শেষ দিন। তাই যেখানে যাচ্ছেন, সেখানের হিজরি মাসের হিসাবটা জেনে রাখুন।
সেরা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পেতে যে দেশেই যান, সেখানের মানুষের জীবনযাত্রা অনুসরণ করতে চেষ্টা করুন। গোটা এলাকা যখন ঘুমিয়ে থাকবে, তখন আপনিও ঘুমানোর চেষ্টা করুন। স্থানীয় মানুষের কর্মচাঞ্চল্যের সময়টায় ঘোরাঘুরি করুন। উপভোগও করতে পারবেন দেশে দেশে রমজানের বৈচিত্র্য।