মেহেরপুর প্রতিনিধি- জ্বালানি বাবদ বরাদ্দ না থাকায় মেহেরপুরের সরকারি দুই হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স সেবা (সার্ভিস) বন্ধ রয়েছে। হাসপাতাল দুটি হলো গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন হতদরিদ্র এবং জটিল রোগে আক্রান্ত রোগী ও তাদের স্বজনরা। তবে মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন দোদুলের বিশেষ অনুরোধে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সেবাটি নামমাত্র চালু রাখা হয়েছে।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় পাম্প মালিকরা জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় প্রসূতি ও জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। তাদের ভাড়া গাড়িতে করে অন্যত্র পাঠাতে হচ্ছে। এতে বাড়তি অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি রোগী ও তাদের স্বজনদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জ্বালানি বাবদ খরচ হয় প্রায় ১৪ লাখ টাকা। অথচ এ খাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দিয়েছে মাত্র ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা পরিশোধ না করায় পাম্প মালিকরা তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। একই অবস্থা মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তবে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসটি কোনো রকমে চালু রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, জেনারেল হাসপাতাল, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স— এ তিন হাসপাতালের অ্যাম্বলেন্সের জন্য জ্বালানি তেল সরবরাহ করে মেহেরপুর শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত মেহেরপুর ফিলিং স্টেশন। বর্তমানে তিন হাসপাতালের কাছে পাম্প মালিকের প্রায় ২২ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। পাওনা পরিশোধ না করায় জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে পাম্প কর্তৃপক্ষ। মেহেরপুর ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী আসাদুল ইসলাম জানান, আগে কখনো এত বড় অঙ্কের টাকা বকেয়া হয়নি। হলেও তা বেশি দিন পড়ে থাকত না। দ্রুত পরিশোধ করা হতো।
তিনি জানান, বকেয়ার কারণে তার ব্যবসার সমস্যা হচ্ছে। তাই জ্বালানি তেল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জনস্বার্থে শুধু মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে জ্বালানি তেল দেয়া হচ্ছে। তাও স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুরোধে। এ ব্যাপারে মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন দোদুল বলেন, জেলা থেকে অন্য স্থানে রোগী পরিবহনে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মানুষ। তাই পাম্প মালিককে অনুরোধ করে অন্তত একটি অ্যাম্বুলেন্স চালু রাখা হয়েছে। বাকি দুটি চালু করতে বরাদ্দের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে অনুরোধ করা হয়েছে। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান জানান, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জ্বালানি বাবদ কোনো বরাদ্দ দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ কারণে বকেয়া পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
তিনি বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে রোগী বহন করা হয় প্রতি কিলোমিটার ১০ টাকা হারে। কিন্তু বেসরকারিভাবে দ্বিগুণ কিংবা তারও বেশি ভাড়া নেয়া হয়। এতে বাড়তি অর্থ খরচ হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।