অগ্রসর প্রতিবেদক: চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) পুণে সুপার জায়ান্টের পর দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধেও উইকেট শূন্যই থেকেছে মুস্তাফিজুরের ঝুলি। ধোনিদের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে উইকেট না পেলেও, মুস্তাফিজুরের ১৭ এবং ১৯তম ওভারে ম্যাচে ফেরে সানরাইজার্স হায়দারাবাদ। বাকি কাজটা হয়েছে আশিষ নেহরার শেষ ওভারে। কিন্তু দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে একেবারেই হতাশ করেছেন মুস্তাফিজুর। উইকেটহীন ৪ ওভারে খরচ করেছেন ৩৯ রান। তাঁর বিখ্যাত কাটারটাই যেন উধাও হয়ে গিয়েছিল সেই ম্যাচে।
তবে কি ফাঁস হয়ে গেল কাটার মাস্টারের রহস্য? ওভার প্রতি প্রায় ১০ রান করে দিলেও মুস্তাফিজুরের কাটার রহস্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন না বেশির ভাগ প্রাক্তন ক্রিকেটারই। বাংলাদেশ দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং বর্তমান নির্বাচক হাবিবুল বাশার বলেন, “এর আগের ম্যাচে তো ধোনির মতো ক্রিকেটারও মুস্তাফিজুরকে খেলতে পারেনি। ভুবনেশ্বর কুমার, আন্দ্রে রাসেল, ক্রিস জর্ডন, মোহাম্মদ সামি, জহির খানরা যেখানে ইনিংসে ৫০ রানের বেশি খরচ করে ফেলেছেন, সেখানে এক ম্যাচে মুস্তাফিজুরের ৩৯ রান দেয়া নিয়ে এত আলোচনা হওয়া উচিত না।”
চলতি আইপিএলে দশ বা তার বেশি উইকেট পেয়েছেন যে বোলাররা, তাদের মধ্যে ইকনমি সবচেয়ে ভাল মুস্তাফিজুরের। সুতরাং এক ম্যাচে মুস্তাফিজুরকে চেনা রূপে দেখা যায়নি বলেই তাঁকে নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ার কারণ দেখছেন না বাশার। তাঁর মতে, “টি-২০তে যেখানে বোলারদের উপর চড়াও হয় ব্যাটসম্যানরা, সেখানে ওভার প্রতি ছ’য়ের ঘরে রান দিয়েছেন মুস্তাফিজ। এর চেয়ে ভাল বোলিং করা কীভাবে সম্ভব? ওকে মেরে খেলা বিপজ্জনক বলেই তো অধিকাংশ ব্যাটসম্যান মেরে খেলতে চায় না। শেন ওয়ার্ন, মুরলিধরনও তো তাদের ক্যারিয়ারে কোনও না কোনও ইনিংসে বাজে বোলিং করেছেন, তারপরও তো তারা বিশ্বের সর্বকালের সেরা বোলার। এক ম্যাচে মুস্তাফিজুর ৩৯ রান দিয়েছে বলে ওর সব কৌশল ধরে ফেলেছে, এমন ধারণা মোটেও ঠিক নয়। তা ছাড়া প্রতিটি ম্যাচে একজন বোলার উইকেট পাবে, এটা ভাবাও ঠিক নয়।”
আইপিএলে মুস্তাফিজের কাটার রহস্য ধরতে প্রযুক্তির ব্যবহার করছে প্রতিপক্ষ দলগুলো। তবে প্রযুক্তির সকল সুবিধা নিয়েও মুস্তাফিজুরের সব কৌশল জানা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বাশার। তিনি বললেন, “মুস্তাফিজুর কিন্তু সিম অফ করে ভেরিয়েশনে বল করছে না। কাটার দিয়েই ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করছে। আইপিএলে এক একটি দলে প্রচুর সাপোর্টি স্টাফ। তাই ভিডিও অ্যানালিসিস অথবা অন্য কোনও প্রযুক্তির মাধ্যমে মুস্তাফিজের বল বোঝার চেষ্টা করছে সবাই। তবে ওর কিছু কিছু অস্ত্র ধরতে পারলেও সমস্যার কিছুই দেখছি না। মুস্তাফিজ যে মানের বোলার, তাতে ওর সব কাটার বুঝে ওঠা সম্ভব নয়।”
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৪-০-৪০-০, এমন বোলিংয়েও মুস্তাফিজকে নিয়ে কম কথা ওঠেনি। তখনই বলা হচ্ছিল, মুস্তাফিজুরের জারিজুড়ি শেষ। আর তারপরেই এসেছে এশিয়া কাপ এবং টি-২০ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচগুলো। সেই ভারতের বিরুদ্ধেই এশিয়া কাপে মুস্তাফিজ হাজির হয়েছিলেন ৪-০-৩৪-২ এর স্পেল নিয়ে। আর টি-২০ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইডেনের সেই বোলিং তো বহু দিন মনে থাকবে সবারই। চার ওভারে ২২ রানে সে দিন ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তাই মাত্র একটি ম্যাচ দেখেই তাঁর সম্পর্কে এত সমালোচনার কারণ নেই বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।