কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছাফাতন বেওয়া দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘৭১ সালে দেশে যুদ্ধ চলছিল। যুদ্ধের ভয়ে স্বামী বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। তখন কোলে ২৫ দিন বয়সের ছেলে সন্তান শহর আলী। ’৭১-এর সেই উত্তাল দিনগুলোর মধ্যে একদিন তিন সন্তানসহ খাদ্যের সন্ধানে একই গ্রামের সাহাপাড়ার ব্যবসায়ী বসন্ত সাহার বাড়িতে যান। খাবার খাওয়ার সময় পাক হানাদার বাহিনীর দল উপস্থিত হয় ওই বাড়িতে। তারা কোলের শিশু সন্তান শহর আলীকে কোল থেকে তুলে নেয়। এক পর্যায়ে পাক বাহিনীর দল শহর আলীকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে আমার উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। ১০-১৫ জনের একটি নরপশু পাকবাহিনীর দল পালাক্রমে সম্মানহানি ঘটিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে রেখে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক যুগ পেরিয়ে গেলেও নিজস্ব থাকার জায়গা তো দূরের কথা সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা তেমন পাইনি। দুই-এক বান্ডিল ডেউটিন, রিলিফের চাল আর একবার কপালে জুটেছিল স্থানীয়দের সংবর্ধনা। নিজের বলতে কিছুই নাই। ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে জয়েনপুর গ্রামে ছোট্ট একটি ঘরে বসবাস করতে হতো। স্বামী মারা যাওয়ার পর ওই ঘরে আর থাকা সম্ভব হয়নি। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে ঠাঁই হয় গুচ্ছগ্রামে। এখন গুচ্ছগ্রামের নিজ ঘরে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারি। শেষ বয়সে ঘরে মরেও শান্তি পাব। বর্তমানে অন্যের বাড়ির পাশে পতিত জায়গায় শাকসবজির আবাদ করে তা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে বিক্রি করছি। শাক বিক্রির ২০-৫০ টাকা দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে-না খেয়ে দিনাতিপাত করতে হয়। ছেলেমেয়ে আলাদা। তারা মোটামুটি ভালোই আছে।’