নয়াবার্তা রিপোর্ট ॥ দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ অচলাবস্থা। মারাত্মক পণ্যজট ও যানজটে নাকাল কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরে ঠাঁই না হওয়ায় রাস্তার ওপর সৃষ্টি হয়েছে ট্রাকজটের। এদিকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় ধস নেমেছে বন্দরের রাজস্ব আদায়ে। গত জানুয়ারি মাসে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট পূরণ হয়নি। নির্ধারিত টার্গেটের চেয়ে ২০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছেন, দেশব্যাপী টানা অবরোধ আর হরতালের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে একদিকে যেমন পণ্যের আমদানি-রপ্তানি কমেছে, অন্যদিকে বন্দর থেকে পণ্য খালাসের পরিমাণও কমেছে মারাত্মক ভাবে। বন্দর গোডাউন, ট্রান্সশিপমেন্ট ও রপ্তানি টার্মিনালে রাখা হয়েছে অতিরিক্ত আমদানি-রপ্তানিবাহী ট্রাক ও নতুন চেসিজ, বাস-ট্রাক, অশোক লিলেন্ড ও নিটল টাটা মটরসের বিভিন্ন পরিবহন। বন্দর এলাকায় কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। মেইন সড়কের ওপর হাজারও পণ্যবাহী ট্রাকের জট লেগে গেছে। দীর্ঘ ট্রাকের লাইন পড়ে গেছে মহাসড়কে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে টানা হরতালে পরিবহন ভাড়া বেড়ে গেছে দ্বিগুণ বলে জানান বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন। ঢাকা, চিটাগাং ও মংলা বন্দরের ন্যায় রাজস্ব আয়ের দিক থেকে ২০০০ সাল পরবর্তীতে বেনাপোল বন্দরের গুরুত্ব বেড়ে যায় অনেক। হরতাল-অবরোধের আওতামুক্ত থেকে এ বন্দরে ভারতের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দর গোডাউনে লোড-আনলোডিংয়ের কাজ থাকে সচল। তবে নিরাপত্তার কারণে আমদানিকৃত পণ্য খালাসের তুলনায় ডেলিভারি কম হওয়ায় যানজট বাড়তে থাকে। গত সপ্তাহে পণ্যবাহী ১২শ’ ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেছে। তবে ডেলিভারি হয়েছে কম বলে জানান বন্দর সংশ্লিষ্টরা। বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান বলেন, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারীদের মধ্যে এক বৈঠকে পণ্যজট কমানো সহ নিরাপত্তাহীনতার কথা বলা হয়েছে। তবে ভারত থেকে পণ্য আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও দেশে ট্রাক সঙ্কটের কারণে পণ্য পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বন্দর এলাকায় অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক আটকে আছে। ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে আমদানি-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। কল-কারখানার কাঁচামাল সরবরাহ কমে যাওয়ায় তা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আলহাজ মহসিন মিলন বলেন, টানা হরতালে বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে অচলাবস্থা নেমে আসছে। প্রশাসনের নিরাপত্তা নিয়ে বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান তিনি।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।