স্টাফ রিপোর্টার: মিয়ানমারে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আকাঙ্ক্ষার দিকে ইঙ্গিত করে ফেসবুকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার পর অং সান সু কিকে বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে ইয়ে লোইন মিয়িন্ত নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে এক পোস্টে মিয়ানমারের বর্তমান সংবিধানে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু কিকে প্রেসিডেন্ট হওয়া থেকে বিরত রাখার যে বিতর্কিত ধারা রয়েছে, সেটি কেউ পরিবর্তন করতে চেষ্টা করলে তাকে গুলি করার হুমকি দেন।
ওই ব্যক্তি তার পোস্টে ৭০ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ী অং সান সু কির নাম উল্লেখ না করলেও এতে তার দিকেই ইঙ্গিত করা হয়। কেননা সু কি তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার অভিলাষ গোপন করার চেষ্টা করেননি।
সু কির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) গত বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিপুল বিজয় লাভ করে। কিন্তু সন্তান ও স্বামী বিদেশী পাসপোর্টধারী হওয়ায় সংবিধানের একটি ধারা অনুযায়ী সু কি প্রেসিডেন্ট হতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সু কির ঘনিষ্ট একজন এনএলডি সদস্য নিশ্চিত করেছেন যে, ‘ওই ব্যক্তির হুমকির পর থেকে’ সু কির জন্য বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
রাজধানী নাইপিদোর একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাও বাড়তি নিরাপত্তার কথা নিশ্চিত করেন। তবে তিনিও নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘তার (সু কি) জন্য পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে… তবে এটি অদাপ্তরিক।’
গত নভেম্বরে তার দল নির্বাচনে জেতার পর সু কি প্রেসিডেন্ট পদে তার একজন প্রক্সি নিয়োগ এবং প্রেসিডেন্টের ‘উপরে’ থেকে দেশ শাসনের অঙ্গীকার করেন। আগামী মার্চে সেই প্রক্সি প্রেসিডেন্ট মনোনীত করার কথা রয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সু কি নিজেই যাতে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন সে লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংবিধানের বিতর্কিত ৫৯ (চ) ধারা বাতিলের ব্যাপারে গোপন আলোচনার গুজব ছড়াচ্ছে।
সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি অত্যান্ত জটিল ও বিরোধপূর্ণ। কেননা, দেশটির শক্তিশালী সেনাবাহিনীর কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবিধান সংশোধনের ঘোরতর বিপক্ষে। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় সাউথ-ইস্ট এশিয়ান নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আলোচনায় যোগ দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন না- এ খবর বের হওয়ার পর মিয়ানমারে বড় ধরনের রাজনৈতিক নাটক চলছে এমন জল্পনা-কল্পনা গভীর হয়েছে। মায়ানমারের বর্তমান সংবিধান সু কির ক্ষমতায় আরোহণই কেবল বন্ধ করেনি এছাড়া এটি সেনাবাহিনীর জন্য পার্লামেন্টে ২৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রেখেছে এবং সেনাবাহিনীকে সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে একটি কার্যকর ভেটো ক্ষমতা প্রদান করেছে।
দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের পুরোধা হিসেবে অং সান সু কি বিগত বছরগুলোতে সেনাবাহিনীর সাক্ষাৎ ‘নেমেসিস’ হয়ে আছেন। তার জন্য ইতোমধ্যেই ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ রয়েছে।
অং সান সুকির পিতা মিয়ানমারের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক জেনারেল অং সান ১৯৪৭ সালে আততায়ীদের হাতে নিহত হন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।