স্টাফ রিপোর্টার: শেষ ওভারে পেসার ক্রিস ওকসের সুবাদে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন রানের নাটকীয় জয় তুলে নিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছে সফরকারী ইংল্যান্ড।
দুবাইতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং থেকে ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে ১৭৩ রান সংগ্রহ করেছিল। ইনিংসে ২০তম ওভারে ওকস মাত্র সাত রান দিলে পাকিস্তানের ইনিংস ৮ উইকেটে ১৬৯ রানেই গুটিয়ে যায়। এর ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ইতোমধ্যেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে নিজেদের করে নিয়েছে ইংলিশরা।
দুবাই স্টেডিয়ামে আসা ২৪ হাজার পাকিস্তানী সমর্থক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদীর করা ঝড়ো ইনিংসে অনেকটাই আশাবাদী হয়ে উঠেছিল। ৮ বলে তিনটি ছয় ও একটি চারের সহায়তায় আফ্রিদীর ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান। কিন্তু আনোয়ার আলী শেষ বলটি ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হলে পাকিস্তান জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ৪ রান তুলে নিতে পারেনি। এর আগে ওকসের করা ১৮তম ওভারে আফ্রিদী ২২ রান তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ঐ ওভারের শেষ বলে আফ্রিদী প্লানকেটের হাতে ক্যাচ তুলে দিলে শেষ দুই ওভারে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল ২৫ রানের।
এই ম্যাচেও পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানদের আগ্রাসী মনোভাব দলের পরাজয়ের পিছনে দায়ী করা হয়েছে। বেশীরভাগ ব্যাটসম্যানই শুরুটা ভাল করলেও তা ধরে রাখতে পারেনি। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আহমেদ শেহজাদ ১৮ বলে দুটি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির সহায়তায় করেছেন সর্বোচ্চ ২৮ রান। রাফাতুল্লাহ মোহাম্মদকে (২৩) সাথে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে শেহজাদ ৫১ রান যোগ করেন। ওয়ান ডাউনে মোহাম্মদ হাফিজ করেছেন ২৫ রান। এছাড়া শোয়েব মালিক ২১ বলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ রান যোগ করেন। কিন্তু উমর আকমল মাত্র ৩ ও শোয়েব মাকসুদ দুই রান করায় পাকিস্তান চাপে পড়ে।
ইংলিশ পেসার লিয়াম প্লানকেট দূর্দান্ত গতিতে বল করে ৩৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। এছাড়া লেগ স্পিনার আদিল রশিদ ১৮ রানে ২ উইকেট পকেটে পুরেছেন।
দুবাইতে বৃহস্পতিবার প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ড ১৪ রানে জয়ী হয়েছিল। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি সোমবার শাহজাহতে অনুষ্ঠিত হবে।
ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ডের অস্থায়ী অধিনায়ক জোস বাটলার বলেছেন, ‘একজন অধিনায়ক হিসেবে আমি কিছুটা চাপ অনুভব করেছিলাম। প্রথম থেকে আমরা যেভাবে স্বাভাবিক ভাবে খেলছিলাম হঠাৎ করেই ছন্দ হারিয়ে ফেলি। টোয়েন্টি২০ ক্রিকেটে শান্ত থাকাটা জরুরী। একজন বোলরকে নিজের সুবিধামত বোলিং করার স্বাধীনতা দিতে হবে, তার উপর আস্থা রাখতে হবে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জয়টা অসাধারণ ছিল, আমরা সত্যিই দারুন খুশী।’
এদিকে আফ্রিদী বলেছেন তার দলের এখনো অনেক জায়গায় কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, প্রথমত আমি ইংল্যান্ডকে দারুন খেলার জন্য অভিনন্দন জানাতে চাই। কিন্তু আমাদের মূলত ফিটনেস এবং ফিল্ডিংয়ের উপর জোড় দিতে হবে। বিশেষ করে টি২০ বিশ্বকাপের আগে এই কাজটা করা জরুরী। আমাদের ম্যাচ জয়ের দারুন সুযোগ ছিল, কিন্তু আমরা সেটা হারিয়েছি।
প্রথমে ব্যাটিং থেকে ইংল্যান্ড জেমস ভিন্সের ২৪ বলে ৩৮ ও বাটলারের ২২ বলে দ্রুতগতির ৩৩ রানের ওপর ভর করে আট উইকেটে ১৭২ রানের লড়াকু ইনিংস গড়ে তোলে। শেষ ৫ ওভারে ইংলিশরা ৫৮ রান যোগ করেছে। লেগ স্পিনার শহীদ আফ্রিদী ১৫ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। চতুর্থ ওভারেই ৩২ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড মূলত চালকের আসনে চলে গিয়েছিল। এরপর আফ্রিদী এ্যালেক্স হেলসকে ১১ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে এবং জেসন রয়কে উইকেটে পিছনে সরফরাজ আহমেদের হাতে ক্যাচে পরিনত করলে ইংল্যান্ডের ইনিংস দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৪৭। রয় ২৯ বলে দুটি ওভার বাউন্ডারি ও একটি বাউন্ডারির সহায়তায় করেছেন ২৯ রান। বাটলার ও ভিন্সে মিলে চতুর্থ উইকেটে ৩৫ রান যোগ করেছেন। আফ্রিদী পুরনায় বোলিংয়ে ফিরে এসে ভিন্সের উইকেট তুলে নেন। তবে তার আগে ভিন্সে ২৪ বলে দুটি ওভার বাউন্ডারি ও তিনটি বাউন্ডারির সহায়তায় সর্বোচ্চ ৩৮ রান সংগ্রহ করেছেন। এই উইকেটের মাধ্যমে আফ্রিদী ৮৬ ম্যাচে ৮৬তম উইকেট দখল করে স্বদেশী সাইদ আজমলকে ছাড়িয়ে গেছেন। এতদিন পর্যন্ত ৬৪ ম্যাচে ৮৫ উইকেট নিয়ে আজমলই ছিলেন টি২০ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।