স্টাফ রিপোর্টার : প্রথম টোয়েন্টি২০ ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এ ম্যাচে বড় ধরণের কিছু রদবদল দেখা গেছে বাংলাদেশের স্কোয়াডে। ম্যাচশেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা জানালেন, ‘বড় ধরনের জয় না পেলেও কিছু পরীক্ষা–নিরীক্ষা কাজে লেগেছে।’
সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংকালে মাশরাফি দলের জয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। এ ম্যাচেই প্রথমবার ৬ নম্বরে ফিনিশারের ভূমিকায় খেলতে নেমেছেন সাকিব আল হাসান, তাতে সফলও হয়েছেন তিনি। আর প্রথমবার টোয়েন্টি২০ ক্রিকেটে গ্লাভস ছাড়া হয়েছেন মুশফিকুর রহিম, নবাগত নুরুল ছিলেন উইকেটের পিছনে সপ্রতিভ।
দুই সিনিয়রকে পরিবর্তনের কঠিন সিদ্ধান্তের বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘দুজনই আন্তরিকভাবে নিয়েছেন ব্যাপারটি।’
তিনি বলেন, ‘সিদ্ধান্তগুলোর দিকে তাকালে খুব কঠিন ছিল। মুশি শেষ ৮-১০ বছর ধরে সব লেভেলে কিপিং করছে। সাকিবের সিদ্ধান্তও খুব কঠিন ছিল। তবে ভালো ব্যাপার হলো যে সিনিয়ররা ব্যাপারটি ভালোভাবেই নিয়েছে, দলের ভালোর জন্যই সব কিছু করা হয়। সাকিব ও মুশির ধন্যবাদ প্রাপ্য যে ওরা ত্যাগ করেছে, দলের ভালোর কথা চিন্তা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘সাকিবকে ৬ নম্বরে নামানোর সিদ্ধান্তটা কঠিন ছিল। একজন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শেষদিকে ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ শেষ করে আসবে, আমরা সেটাই চাচ্ছিলাম। সাকিব সেটা করতে পেরেছে। সাকিবের মতো ক্রিকেটারের জন্য ওই পজিশনে ব্যাটিং করা কঠিন না। কারণ সে আমাদের দলের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান। কিন্ত দলের ভালোর জন্যই ওকে ছয়ে নামানো হয়েছে। সে যেই ছাড় দিয়েছে সেজন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য। মুশফিক শেষ ৮-১০-১২ বছর ধরে কিপিং করছে সব ধরনের ক্রিকেটে। আজকে সে তার কিপিং দলের প্রয়োজনে ত্যাগ করেছে। দলের ভালোর জন্যই সবকিছু করা হয়। এখানে আমি মনে করি সাকিব ও মুশির (মুশফিক) ধন্যবাদ প্রাপ্য যে ওরা ত্যাগ করেছে। তারা দুজনই দলের ভালোর কথা চিন্তা করেছে। হয়ত বা কোনো ম্যাচে মুশিও কিপিং করবে। সব সময় একই থাকবে না।’
এশিয়া ও বিশ্বকাপের জন্য পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন বোলিং অলরাউন্ডার শুভাগত হোম। কিন্তু দলে থেকেও বোলিং করেননি তিনি। এ বিষয়ে মাশরাফি দু:খপ্রকাশ করে বলেন, ‘শুভাগতর বিষয়টা ছিল, আসলে আমরা চাইনি ও চারে ব্যাট করুক। ওই জায়গায় রিয়াদের ব্যাটিং করার কথা ছিল। এরপরও ওকে পাঠানো হয়। কারণ ও দলে খেলেছে একজন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে। ম্যাচে আমি ওকে বোলিং করাতে পারিনি। ওকে বল করানো উচিত ছিল। এখানে আমার একটা ভুল হয়ে গেছে। এ জন্য ক্ষমা চাচ্ছি আমি।’
তিনি বলেন, ‘বোলিংয়ে শুরুর দিকে আরও ভালো করতে হবে। সামনে আরও বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে হবে। ব্যাটিংয়ে প্রথমে ওই রান আউট; পরে মাঝে মুশফিক ও সাব্বির যদি না আউট হত, তাহলে ১৭-১৮ ওভারেই খেলা শেষ হয়ে যেত।’
দলের প্রশংসা করে অধিনায়ক বলেন, ‘রান তাড়ায় শেষের দিকে আমরা আতঙ্কিত হইনি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগে দেখা গেছে, আমরা আতঙ্কিত হয়ে আউট হয়েছি। বড় রান তাড়া করলাম আজকে, এই আত্মবিশ্বাসও থাকবে। সবমিলিয়ে পারফরম্যান্স নিখুঁত ছিল না। তবে আমরা গুছিয়ে নিতে পারব বলে আশা করি।’
নবাগত উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুলের প্রশংসা করে মাশরাফি বলেন, ‘ওর কাজ যেটি, সেটি ভালোভাবেই করতে পেরেছে। সাকিব ছিল উইকেটে, সোহানের (নুরুল) কাজ ছিল স্ট্রাইক রোটেট করা, পারলে মাঝেমধ্যে একটি-দুটি চার মারা। সেটা সে পেরেছে। আর টোয়েন্টি২০ ফরম্যাটে রিল্যাক্সড থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওকে দেখে মনে হয়েছে, খুব রিল্যাক্সড ছিল। প্রথম ম্যাচেই বিচার করা কঠিন, তবে শুরুটা বেশ ভালো। এই ধরনের একজন ক্রিকেটার পেয়ে আমি রোমাঞ্চিত।’
তিনি বলেন, ‘কিপিং তো অসাধারণ করেছে সে। দারুণ রিল্যাক্সড ছিল। সামনে এসে কিপিং করেছে। কম বয়সে সুযোগ পেয়েছে, এখন অবশ্যই এই তাড়না ওর আছে যে মাঠে ছুটোছুটি করবে, বা সবাইকে সক্রিয় রাখবে। এই ব্যাপারগুলি ওর কাছ থেকে আমরা আশা করি। ওকে এজন্যই দলে নেওয়া হয়েছে। ওর শক্তির জায়গাগুলোতে সে আজ পুরোপুরি ঠিক ছিল।’