নড়াইল প্রতিনিধি- নড়াইলে চলতি বছর পাটের আশাতীত ফলন হয়েছে। এ জেলায় এখন পাট কাটা, জাগ দেয়া ও শুকানোর কাজ চলছে। তবে নদ-নদী ও খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেয়ায় পানি পচে গিয়েছে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য তা মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানি পচে যাওয়ায় মাছসহ জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। নদী তীরবর্তী মানুষ এই পানি ব্যবহার করে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জেলার সচেতন মহল জানায়, পাট পচানোর রিবন রেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করলে পরিবেশের এ অবস্থা হতো না। কিন্তু জেলার কৃষি বিভাগ এক্ষেত্রে কার্যকর কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করেনি। চাষীদের মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রচারণা চালায়নি, প্রশিক্ষণও দেয়নি।
জেলার কৃষি বিভাগের সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলতি বছর পাটের আবাদ বেড়েছে। গত বছর জেলার ১৮ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিল। চলতি বছর আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৩৩০ হেক্টরে। সরেজমিনে দেখা যায়, জেলায় চাষীরা এখন পাট কাটা, জাগ দেয়া ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত। কৃষি পরিবারের নারী ও শিশু, কিশোর-কিশোরীরা পাট বাছা ও শুকানোর কাজে সহযোগিতা করছে। প্রান্তিক পরিবারের নারী ও শিশুরা পাট বাছাই করে রোজগারও করেছে। সব মিলিয়ে জেলায় পাট মৌসুমে কৃষি পরিবারগুলোয় কর্মতৎপরতা বেড়েছে। তবে একই সঙ্গে পাট জাগ দেয়ার ক্ষেত্রে সনাতন পদ্ধতি অবলম্বন করায় জেলার নদনদী, খালবিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ের পানি পচে পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাছসহ নদ-নদী ও খাল-বিলের বিভিন্ন জলজ সম্পদ মারা যাচ্ছে।
স্থানীয় চাষীরা জানান, তারা পাট জাগ দেয়ার বিকল্প কোনো পদ্ধতি যে রয়েছে, তা জানেন না। নদ-নদী ও খাল-বিলে পাট জাগ দিলে পানি পচে যায়, তারা সেটা জানেন। কিন্তু বাধ্য হয়েই তারা পানির এসব উেস পাট জাগ দেন। তাছাড়া নদ-নদী, খাল-বিলে পাট জাগ দিলে রঙ ভালো হয়। দামও বেশি পাওয়া যায় বলে তারা জানান। পাট পচানোর পরিবর্তে রিবন রেটিং পদ্ধতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে চাষীরা বলেন, এ পদ্ধতি সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই। স্থানীয় কৃষি বিভাগ এ ব্যাপারে আমাদের কিছু জানায়নি। কোনো প্রশিক্ষণও দেয়নি।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক শেখ আমিনুল হক জানান, পাট প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে রিবন রেটিং একটি আধুনিক প্রযুক্তি। তা ব্যবহারে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করতে চাষীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া অব্যাহত রয়েছে।