স্টাফ রিপোর্টার: আজ ফজরের নামাজের পর আ’ম বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে।
মুসল্লিদের ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মুখরিত ইজতেমার মাঠ। উর্দু, আরবি ও ফার্সিতে দেয়া মূল বয়ান বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষায় তরজমা করা হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমায়।
ইজতেমা কমিটি সূত্র জানায়, দ্বিতীয় পর্বে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মিসর, ওমান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ভারত, সুদান ও দুবাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার মুসল্লি ময়দানে সমবেত হয়েছেন।
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে সরকার সর্বোচ্চ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নিরাপত্তারক্ষায় প্রায় ১২ হাজারের বেশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই শিফটে ২৪ ঘণ্টা ইজতেমা ময়দানে কাজ করছে।
আজ শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে বৃহত্তম জুমা’র জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জুমা’র নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা জুবায়ের।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, জাহিদ আহসান রাসেল এমপি ও জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ এমপিসহ হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান জুমা’র নামাজে অংশগ্রহণ করেন।
আজ সকাল থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসলমান দলে দলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় ও গুনাহ মাফের জন্য কিছু সময় সৃষ্টিকর্তার আনুকূল্য পেতে জুমার নামাজে শরিক হন। জুমার জামাতে শরিক হয়ে নামাজ আদায় করতে শুক্রবার সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ইজতেমা মাঠের দিকে ঢল নামে মুসল্লীদের।
ইজতেমার প্রথম পর্ব থেকে দ্বিতীয় পর্বে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে।
আগামী রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উপস্থিতিতে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ প্রান্তরে বর্তমানে এক অভাবনীয় ধর্মীয় ভাবগম্বীর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। সমবেত মুসল্লিদের এবাদতবন্দেগি-জিকির আসকারে টঙ্গীর তুরাগ তীর এখন যেন এক ধর্মীয় পূণ্য নগরীতে পরিণত হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার মুসল্লিদের মূল প্যন্ডেলে অবস্থানের জন্য জেলাওয়ারী খিত্তা রয়েছে। বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব উপলক্ষে মুসল্লিদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে যানবাহন চলাচল ও পার্কিং নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
ইজতেমার প্রথম পর্ব থেকেই সরকারি মেডিক্যাল টিম মুসল্লিদের সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছে। এছাড়াও ইজতেমা মাঠের উত্তরে মন্নু নগর এলাকায় ৪২টি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মুসল্লিদের জন্য টঙ্গী সরকারি হাসপাতালেও পর্যাপ্ত বিছানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজধানী ঢাকার উপকন্ঠে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে প্রায় ১৬০ একর জমির বিশাল ময়দানে ১৯৬৭ সাল থেকে দেশি-বিদেশের মুসল্লীদের উপস্থিতিতে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এর আগে ১৯৬৬ সালে টঙ্গির পাগার এলাকায় বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব ইজতেমার এই ময়দানটি বরাদ্দ দিয়ে যান। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইজতেমা ময়দানের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সময় প্রায় ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন বলে জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বাসস’কে জানিয়েছেন।
আগামী রোববার দ্বিতীয় পর্বের আখেরী মোনাজাতে দেশ-বিদেশের মুসল্লিসহ লাখ লাখ মুসল্লি অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে টঙ্গীতে দুই দফায় বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।