এদিকে ‘সমৃদ্ধির সোনালী দিন, আনতে হলে আয়কর দিন’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সারাদেশে সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা শুরু হয়েছে। ঢাকাসহ বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত এ মেলা চলবে। ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের কর প্রদানে উৎসাহ দিতে অষ্টমবারের মতো এ মেলার আয়োজন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজস্ব প্রাপ্তি এবং সরকারের বাজেট বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অত্যন্ত কম। এটা লজ্জাকর। ১৬ কোটি মানুষের দেশে কর দেন মাত্র ১৩ লাখ। তবে এই অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। আগামী ২ বছরের মধ্যে লজ্জাকর অবস্থার মধ্যে থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারবো। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫ লাখ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।
এনবিআর জানায়, অন্যান্য বছরের মতো এবারও প্রথমদিনেই ঢাকায় আয়কর মেলায় বিপুল সাড়া মিলেছে। লাইন ধরে করদাতাদের রিটার্ন দাখিলসহ বিভিন্ন সেবা নিতে দেখা গেছে।দ্রুত সেবা পেয়ে করদাতারাও খুশি। এ বছর ৮ বিভাগীয় শহরে ৭দিন, জেলা শহরগুলোতে ৪দিন এবং দ্বিতীয় বারের মত ২৯টি উপজেলায় ২ দিনব্যাপী স্থায়ী আয়কর মেলা এবং ৫৭টি উপজেলায় ১দিন ভ্রাম্যমান আয়কর মেলা হবে।রুঙিণ ব্যানার,ফেস্টুন, বেলুন ও আলোকসজ্জার মাধ্যমে আঞ্চলিক পর্যায়েও মেলা আকর্যনীয় ও ফলপ্রসু করার উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর।
এবার প্রথমবারের মত করদাতারা মেলায় এসে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সুযোগ পাচ্ছেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে করদাতাদের মেলায় যাতায়াতের সুবিধার্তে এবার ৮টি শাটল বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। করদাতাদের কর তথ্য ও সেবা সহজে পেতে আয়কর মেলায় ঢাকার প্রতিটি কর অঞ্চলের জন্য পৃথক বুথ রয়েছে।কর বিভাগ ছাড়াও কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগেরও বুথ রাখা রয়েছে মেলায়। যাতে করদাতার ভ্যাট বা কাস্টমস সম্পর্কে তথ্য পেতে পারেন। মেলায় মোট ১০২টি বুথ স্থান পেয়েছে।
এনবিআরের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে অনলাইনেও কর পরিশোধ করতে পারছেন করদাতারা। যারা ফরম পূরণ করতে পারবেন না, তাদের জন্য চালু থাকবে হেল্প ডেস্ক। এ ছাড়া নারী, প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য আলাদা বুথ রয়েছে।কর পরিশোধে মেলায় সোনালী ও জনতা ব্যাংকের বুথ স্থাপন করা হয়েছে।
মেলায় ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন করার ব্যবস্থা রয়েছে। কীভাবে দাখিল ও ফরম পূরণ করতে হবে-এ বিষয়ে সহযোগীতায় দিচ্ছেন এনবিআরের রাজস্ব কর্মকর্তারা। পুরো মেলা স্পট শক্তিশালী ইন্টারনেট সার্ভিস দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। কর-সংক্রান্ত হিসাবের সুবিধায় থাকবে ইলেকট্রিক ক্যালকুলেটর ও ফটোকপিয়ার মেশিনও।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এম এ মান্নান বলেন, কর প্রদান প্রক্রিয়া সহজ করতে কর কাঠামো সংস্কার চলছে। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে করসেবা আরো সহজ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আয়কর মেলার সুখ্যাতি এখন দেশের সীমান ছাড়িয়ে বিদেশে পৌঁছাইছে। করের জন্য মেলা সেটা কেবলমাত্র আমরা করতে পেরেছি।
এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ ঢাকার মত জেলা ও উপজেলা শহরে রাজস্ব কমপ্লেক্স বা নিজস্ব রাজস্ব ভবন নির্মাণের পরামর্শ দেন। তিনি বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে ট্যাক্স ইউং চালু করার দাবি জানান। এতে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন। কেননা তারা বিনিয়োগের আগে বাংলাদেশের করের বিষয়ে জানতে চান।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, করদাতাদের উৎসাহ প্রদানে এবার ৩টি ক্যাটাগরীতে ৩০০ জন সেরা করদাতা নির্বাচিত করা হয়েছে। নারী এবং তরুণ উদ্যোক্তা ক্যাটাগরীতে আলাদাভাবে ১০০ করে মোট ২০০ করদাতা নির্বাচিত করা হয়েছে। এছাড়া সার্বিকভাবে নির্বাচিত করা আরো ১০০ করদাতা এই তালিকায় রয়েছেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।