অগ্রসর রিপোর্ট :উন্নয়নকে টেকসই করতে সব পর্যায়ে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি ‘বলেছেন, মানব সভ্যতার অস্তিত্ব রক্ষায় প্রতিবেশ-সংরক্ষণ এবং অবক্ষয়িত পরিবেশ পুনরুদ্ধারের কোনো বিকল্প নেই।’
শনিবার (৫ জুন) ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (০৪ জুন) দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
একইসঙ্গে পরিবেশ-সংরক্ষণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২১’ পালনের উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রতিবেশ-ধ্বংসকারী কার্যক্রম যেমন বন-জঙ্গল ধ্বংস করা, বন্যপ্রাণীনিধন এবং বায়ুদূষণসহ অন্যান্য দূষণবৃদ্ধির প্রভাবে জলবায়ু-পরিবর্তনের ফলে আজ মানবজাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রকৃতি, প্রতিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য-সংরক্ষণ এবং এগুলোর টেকসই ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়ে এ বছরের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার, হোক সবার অঙ্গীকার’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী হয়েছে। মানব সভ্যতার অস্তিত্ব রক্ষায় প্রতিবেশ-সংরক্ষণ এবং অবক্ষয়িত পরিবেশ পুনরুদ্ধারের কোনো বিকল্প নেই।
ভৌগোলিক অবস্থানজনিত কারণে বাংলাদেশ বছরের বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয় জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, এর সাথে যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য-সংরক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশ সংবিধানে ১৮ক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- ‘রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।’ এ অনুচ্ছেদ সন্নিবেশের মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ আইনে পরিবেশ-সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা ও গুরুত্ব প্রতিফলিত হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ক্রমক্ষয়িষ্ণু প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের অবক্ষয়ের অব্যাহত ধারা-প্রতিরোধে জাতিসংঘ ২০২১-২০৩০ সময়কে প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার দশক হিসেবে ঘোষণা করেছে।
মো. আবদুল হামিদ বলেন, সরকার জীববৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশগুলোকে সংরক্ষিত এলাকা ও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণাপূর্বক সেগুলোর প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সকলক্ষেত্রে যাতে পরিবেশগত টেকসই উন্নয়নকে বিবেচনায় নেয়া হয়, সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান-স্থাপনে প্রতিবেশ ও পরিবেশসম্মত বিধিব্যবস্থা-প্রতিপালনের দিকে বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে কৃষি, শিল্পসহ সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।
‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২১’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেছেন রাষ্ট্রপতি।