অগ্রসর রিপোর্ট: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করেছেন, তার বাহিনী শুধুমাত্র ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানের পারমাণবিক ও তেল স্থাপনায় হামলার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দেওয়া পরই যুক্তরাষ্ট্রকে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিলেন নেতানিয়াহু।
সোমবার প্রকাশিত মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এক মার্কিনসহ দুইজন বেনামী কর্মকর্তাদের বরাতে ওয়াশিংটন পোস্টে বলেছে, নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে বাইডেনের সঙ্গে এক ফোন কলের সময় ইরানের সামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করার আশ্বাস দিয়েছেন।
গত ১ অক্টোবর রাজধানী তেল আবিব, জেরুজালেমসহ ইসরায়েলে বিভিন্ন স্থানে ১৮০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস (আইআরজিসি) বলেছে, গত মাসে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নসরুল্লাহকে হত্যা এবং তেহরানে বোমা হামলায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াহ হত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে।
এর আগে গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েল বোমা হামলায় ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। ইরান সেই হামলার জবাবে ইসরায়েলে শতাধিক ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল।
এসব হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘ইরান একটি বড় ভুল করেছে এবং এর মাশুল দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেছেন, ইরানের হামলার জবাব দিতে কাঙ্ক্ষিত সময় ও স্থানের জন্য তিনি অপেক্ষা করছেন।
এদিকে ইরানের ওপর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে হোয়াইট হাউস ও পেন্টাগনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইসরায়েলের আলোচনা চলছে। এসব আলোচনায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা না বাড়াতে তাকে শাসিয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইরানের তেলের অবকাঠামো ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করলে ইসরায়েলকে সমর্থন করবে না যুক্তরাষ্ট্র।
কারণ ইরানের তেলের অবকাঠামোর ওপর সম্ভাব্য আক্রমণের একটি উল্লেখ যা বিশ্বব্যাপী তেলের দামকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
মার্কিন কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, ইসরায়েল ৫ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনের আগে ইরানে আক্রমণ চালাবে, কারণ পদক্ষেপটি আরও বিলম্বিত করাকে ইসরায়েলের দুর্বলতার লক্ষণ হিসেবে দেখবে ইরান।
তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে আলোচনার সময় তুলনামূলক “অধিক সংযত জায়গায়’ ছিলেন নেতানিয়াহু। যা ইসরায়েলকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘থাড’ ও সেগুলো পরিচালনার জন্য ১০০ মার্কিন সেনা পাঠানোর বিষয়ে বাইডেনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন রবিবার থাড মোতায়েনের কথা ঘোষণা করে বলেছে, এটি ইসরায়েলের সমন্বিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। একইসঙ্গে এটি ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি ওয়াশিংটনের ‘লোহার আবরণের মতো’ দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার বলেছেন, ‘ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাকে সহায়তা করতে এবং ইরান ও ইরান-সংশ্লিষ্ট মিলিশিয়াদের আক্রমণ থেকে আমেরিকানদের রক্ষা করার জন্য সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন সামরিক বাহিনী যে বিস্তৃত কর্মকাণ্ড সমন্বয় করেছে, এটি তারই একটি অংশ।’