অগ্রসর রিপোর্ট:
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ইলিশ রফতানি বাড়ানো আর ঠিক হবে না। সরকার চলতি বছর ১ হাজার ৩৫২ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির মাধ্যমে ১ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার (১৪১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা) আয় করেছে। বৃহস্পতিবার (০৬ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২২ বাস্তবায়ন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ইলিশ রফতানি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমার অভিমত দেশের সব মানুষ ইলিশের স্বাদ গ্রহণ করুক। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে বেশ কিছু দেশে ইলিশ রফতানি হচ্ছে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য রফতানি হয় ভারতে, সেখান থেকে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসে। হাইকোর্ট যদি কোন আদেশ দেয় তাহলে অবশ্যই সেটি প্রতিপালন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, অন্যান্য কয়েকটি দেশেও ইলিশ গেছে, সেগুলো উপহার কিংবা ব্যক্তিগতভাবে গেছে। কিন্তু বাণিজ্যিক ইলিশ রফতানি হয়েছে ভারতে। আগে ইলিশ পাওয়াই যেতো না। এখন ইলিশ অনেক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে, আমার মনে হয় ৬৪টি জেলার সর্বত্র ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। দেশের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে ইলিশ পৌঁছানো আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। আমাদের কর্মসূচি সফল করতে পারলে ইলিশ সবার কাছে পৌঁছাবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ইলিশ রফতানি বাড়ানো আর ঠিক হবে না।
মন্ত্রী বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় ইলিশের বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনায় নিয়ে ধরে মৎস্য সংরক্ষণ আইন সংশোধন করে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধের সময় ২২ দিন করা হয়েছে।
প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ সমৃদ্ধ এলাকার জেলেদের জীবনধারণের জন্য ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া চলতি বছর জাটকা ধরা নিষিদ্ধকালে দেশের ২০ জেলার ৯৭টি উপজেলায় জাটকা আহরণে বিরত ৩ লাখ ৯০ হাজার ৭০০ জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি হারে ফেব্রুয়ারি-মে পর্যন্ত ৪ মাসের জন্য ৫৯ হাজার ১৪১ মেট্রিক টন ভিজিএফ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ২০২২ সালে সামুদ্রিক জলসীমায় ৬৫দিন মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকালে সমুদ্র উপকূলীয় ৩ লাখ ১১ হাজার ৬২টি জেলে পরিবারকে ২৬ হাজার ৮৩ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, গত ১২ বছরে দেশে ইলিশ আহরণ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এ সময়ে দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির হার প্রায় ৯০ শতাংশ। এ বছর জেলেদের জন্য ভিজিএফ-এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে পরিবার প্রতি ২০ কেজি হতে ২৫ কেজিতে উন্নীত করা হয়েছে। এর আওতায় দেশের ৩৭ জেলার ১৫৫ উপজেলায় ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮৭ টি জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি হারে ১৩ হাজার ৮৭২ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। #