নাহিদ রানা উইকেট নিয়েও থাকলেন নির্লিপ্ত। তাকে ঘিরে জটলা তৈরি হতেও সময় লাগলো বেশ।
প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট এনে দেওয়ার আগের সময়টা ভালো কাটেনি দলের, তার জন্যও। যদিও দিনের শুরুতে পাঁচ উইকেটে আশার আলো ছিল।
পরে কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বড় জুটিতে পথ খুঁজে পায় শ্রীলঙ্কা। তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন নাহিদ রানা। দিনের শেষে অবশ্য সব আশার আলোই মলিন হয়ে গেছে ব্যাটিংয়ে নেমে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলায়।
শুক্রবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম দিনশেষে লঙ্কানদের চেয়ে ২৪৮ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ২৮০ রান করে শ্রীলঙ্কা। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩২ রান করে স্বাগতিকরা। তাইজুল শূন্য ও জয় ৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন।
এ ম্যাচে তরুণ পেসার নাহিদ রানার অভিষেক করে বাংলাদেশ। যদিও বোলিংয়ের শুরুটা করেন শরিফুল ও খালেদ। নিজের প্রথম ওভারের শেষ বলে গিয়ে উইকেটও এনে দেন খালেদ। অফ স্টাম্প থেকে বেশ দূরের বলে ড্রাইভ করতে যান নিশান মাদুশকা। তৃতীয় স্লিপে বেশ জোরে যাওয়া বল ক্যাচ ধরেন মিরাজ।
দ্বিতীয় উইকেটের জন্য অবশ্য কিছুটা অপেক্ষা ছিল বাংলাদেশের। ১২তম ওভারে গিয়ে কুশল মেন্ডিসকে ফেরান খালেদ। ২৬ বলে ১৬ রান করে দেরিতে কাট করতে গিয়ে গালিতে দাঁড়ানো জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ৫৭ বলে মেন্ডিসের সঙ্গে ৩৭ রানের জুটি ভেঙে যায় দিমুথ করুণারত্নের।
ওই ওভারেই করুণারত্নেকেও ফেরান খালেদ। ৩৭ বলে ১৭ রান করা এই ব্যাটারকে দুর্দান্ত এক বলে বোল্ড করেন খালেদ। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢুকে বলটি। তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া শ্রীলঙ্কা আরও বেশি বিপদে পড়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস রান আউট হলে।
খালেদের বলে অফ সাইডে ফেলে দৌড় শুরু করেন দিনেশ চান্দিমাল। কিন্তু দৌড়ের সময় কিছুটা অলস ছিলেন ম্যাথিউস। নাজমুল হোসেন শান্তর সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভাঙে তার।
এরপর চান্দিমালকেও ফিরিয়ে দেন শরিফুল। লেগ স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ১৩ বলে ৯ রান করে ফেরেন চান্দিমাল। ৫৭ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। এরপর উইকেটে এসে প্রথম বলেই জীবন পেয়ে যান কামিন্দু মেন্ডিস। স্লিপে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন মাহমুদুল হাসান জয়।
পরে এজন্য ভুগতে হয়েছে বাংলাদেশকে। হাফ সেঞ্চুরির পথ পেরিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন কামিন্দু। তার বড় জুটির সঙ্গী ধনঞ্জয়াও পান তিন অঙ্কের দেখা। এ দুজনের জুটি ভাঙেন নাহিদ রানা। অভিষেক টেস্টে শুরু থেকেই রান দিচ্ছিলেন তিনি। হুট করে দলের ত্রাতা হয়ে যান।
প্রথমে কামিন্দু উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেন। এতে ভাঙে ২৪৫ বলে ২০২ রানের জুটি। বিপদ সামলে ঝড়ো ব্যাট করা কামিন্দু ১১ চার ও ৩ ছক্কায় ১২৭ বলে করেন ১০২ রান। ওই ওভারেই আরেক সেঞ্চুরিয়ান ধনঞ্জয়াকেও ফিরিয়ে দেন নাহিদ।
তার বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন ১৩১ বলে ১০২ রান করা এই ব্যাটার। এরপর আর অলআউট হতে খুব বেশি সময় লাগেনি শ্রীলঙ্কার। ১৭ ওভারে ৭২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন খালেদ। ৩ উইকেট নিতে ১৪ ওভারে ৮৭ রান দেন নাহিদ। তাইজুল ও শরিফুল পান একটি করে উইকেট।
শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই বাংলাদেশ। দুই উইকেট নিয়েছেন বিশ্ব ফার্নান্দো। ৮ বলে ৯ রান করার পর এলবিডব্লিউ হয়ে যান জাকির হাসান। পরের ওভারে এসে নাজমুল হোসেন শান্তকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে বিশ্ব ফার্নান্দো। দুই ক্ষেত্রেই রিভিউ নিলেও কোনোটিতেই সফল হয়নি বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের বিপদটা আরও বাড়ে মুমিনুল হক ফিরলে। তাকে অবশ্য ফেরান কাসুন রাজিথা। ৭ বলে ৫ রান করে স্লিপে ক্যাচ দেন মুমিনুল।