অগ্রসর রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পানিকে নতুন উন্নয়ন কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করে আন্তঃসীমান্ত জলাধারের সুষম বন্টন নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্ব দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার জাতিসংঘ সদর দফতরে পানি (এইচএলপিডব্লিউ) বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় তিনি বলেন, ‘নদী অববাহিকায় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা এবং পানি সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ কার্যকর মোকাবেলায় পানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি সুবিধার উন্নয়নসহ আমাদের আন্তঃসীমান্ত জলাধারের সুষম বন্টন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবার জন্য স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানি নিশ্চিত করার জন্য সেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশ বেশি নিরাপদ খাবার পানি পাচ্ছে এবং ৬৫ শতাংশ মানুষ নিরাপদ স্যানিটেশন সুবিধা পাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজেন্ডা ২০৩০-এ পানি এবং বৃহত্তর টেকসই উন্নয়ন আন্তঃসম্পর্কযুক্ত করা হয়েছে। তিনি জরুরি ক্ষেত্র তুলে ধরে বলেন, এসব ক্ষেত্রে জরুরি আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, কৃষিতে সার্বিকভাবে ৭০ শতাংশ স্বাদু পানির ব্যবহার হয় এ ক্ষেত্রে প্রথমে আমরা স্বল্প পানিতে উৎপাদনযোগ্য শস্যের জাত উন্নয়ন অব্যাহত রাখবো। দ্বিতীয়ত, তিনি পানি সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ কার্যকর মোকাবেলায় পানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি সুবিধার উন্নয়ন ঘটাতে হবে।
তৃতীয়ত, আমাদের নদী অববাহিকায় সমন্বিত ব্যবস্থাপনাসহ আন্তঃসীমান্ত জলাধারের সুষম বন্টন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
চতুর্থত ‘পানির ব্যবস্থাপনা ও কার্যকর ব্যবহারের জন্য পানি সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোয় আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে। আমি এসডিজি-৬ এর জন্য বৈশ্বিক তহবিল গঠনের জোরালো সুপারিশ করছি।’
পঞ্চম, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য, স্বাস্থ্য এবং জ্বালানি নিরাপত্তা পানির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হওয়ায় পানিকে নতুন উন্নয়ন কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাবার পানি এবং স্যানিটেশন সুবিধা মানবাধিকারের অংশ… আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জোরদারে আমি আমাদের ভাবনা তুলে ধরলাম। আমি আপনাদের সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি।
পরে অন্যান্য প্যানেল সদস্যদের সঙ্গে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজ এইচএলপিডব্লিউ’র সদস্যরা নয়টি বিস্তৃত বিষয় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং পানি নিশ্চিত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং অন্যান্য নেতাদের তাদের চিন্তায়, রাজনীতিতে এবং কার্যক্রমে পানি ইস্যুর প্রতি গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা পানি অধিকার এবং সবার জন্য পানি ও স্যানিটেশন চাহিদার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছি।
‘পানির কার্যকর ব্যবহারের জন্য কার্যকর ও উদ্ভাবনী অবকাঠামোয় আমাদের ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন’Ñ এ কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা গবেষণা, উদ্ভাবনা এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরে সহায়তা দিতে ওয়াটার এসডিজি বিষয় বৈশ্বিক তহবিল গঠনের জোরালো সুপারিশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে এই আহ্বানে সাড়া দিতে মিডিয়ার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এবং আমাদের সামগ্রিক সমৃদ্ধির জন্য এই বিশ্বের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।