অগ্রসর রিপোর্ট : আজ রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় খুলনা জেলা কারাগারে জঙ্গি নেতা আরিফের ফাঁসি কার্যকর করা হবে। বহুল আলোচিত ঝালকাঠির ২ বিচারককে হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) নেতা আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফের ফাঁসি কার্যকর করা হচ্ছে। খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নূর-ই-আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাতে ফাঁসি কার্যকর করা হবে। আর এ কারণে কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। এদিকে আরিফের মৃত্যুদন্ডের মাধ্যমে এক যুগ পর খুলনা কারাগারে কোনো দ-িতের ফাঁসি কার্যকর হতে যাচ্ছে। সর্বশেষ ২০০৪ সালের ১০ মে খুলনা জেলা কারাগারে শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
আজ রাতে জঙ্গি নেতা আরিফের ফাঁসি কার্যকর
জানা যায় গত ২০০৮ সাল থেকে খুলনা জেলা কারাগারে রয়েছেন আরিফ। জেএমবি জঙ্গিদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠির ২ বিচারক নিহত হন। ওই দিন সকাল ৯টার দিকে সরকারি বাসা থেকে জেলা জজ আদালতে যাওয়ার পথে ২ বিচারককে বহনকারী মাইক্রোবাসে হামলা চালানো হয়। হামলার পর ঘটনাস্থলেই মারা যান জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ এবং বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ে। আহত অবস্থায় ধরা পড়েন হামলাকারী জেএমবির সদস্য ইফতেখার হাসান আল মামুন।
পরে জেএমবির অন্যান্য শীর্ষ নেতারাও আটক হন। জঙ্গিদের ঝালকাঠি এনে জেলা জজ আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচারকাজ চলে। ২০০৬ সালের ২৯ মে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহম্মেদ জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই, শায়খের ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাতা আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন, খালেদ সাইফুল্লাহ (ফারুক) ও আসাদুল ইসলাম আরিফকে ফাঁসির আদেশ দেন। দেশের বিভিন্ন কারাগারে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ৬ জঙ্গির মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়।
তাদের মধ্যে আরিফ পলাতক থাকায় সে সময় আপিলের সুযোগ পাননি। বাকি ৬ জঙ্গির ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২০০৬ সালের ৩১ আগস্ট তাদের মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রাখেন উচ্চ আদালত। ওই বছরের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ হাইকোর্টের মৃত্যুদ-াদেশের বিরুদ্ধে ৬ জঙ্গির জেল আপিল খারিজ করে দেন। পরের বছর ৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি ৬ জঙ্গির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিলে ২৯ মার্চ রাতে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ৬ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ৬
শীর্ষ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর ২০০৭ সালের ১০ জুলাই এ মামলায় আরিফ ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার হন। ওই বছর জুলাই মাসে হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি। শুনানি শেষে হাইকোর্ট তার মৃত্যুদন্ড বহাল রাখেন। পরে আপিল বিভাগেও তার সাজা বহাল থাকে। আপিল বিভাগের দেয়া মৃত্যুদন্ড বহালের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আরিফ যে আবেদন করেছিলেন গত ২৮ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির বেঞ্চ তা খারিজ করে দিয়েছেন।