মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মাশুরগাঁও গ্রামের নুরুন নাহার ইরা (১৮) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী প্রায় এক মাস যাবত নিখোঁজ রয়েছে। সে শ্রীনগর সরকারি কলেজের একাদশ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থী ইরা গত ১৯ জুন নিজ বাড়ি থেকে বের হলে আর ফিরে আসেনি। মা-বাবার ধারণা- তাদের সন্তান জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনায় গত ১০ জুলাই মা শামীমা আক্তার শ্রীনগর থানায় নিখোঁজের জিডি দায়ের করেন।
এদিকে, পুলিশ ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২টি জিহাদী বই উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের শ্রীনগর সার্কেল এএসপি শামসুজ্জামান বাবু।
তিনি জানান, গত রোববার (১৭ জুলাই) পুলিশ কলেজ শিক্ষার্থীর বাড়িতে তল্লাসি চালিয়ে বেহেস্তা যাওয়ার পথ ও মহিলাদের ওয়াজ-নামে ২টি জিহাদী বই উদ্ধার করে। তিনি আরো জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে করা জিডির সূত্র ধরে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীর মা শামীমা আক্তার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন-তার সন্তান জঙ্গি সংগঠনের জড়িয়ে পড়েছে। নিখোঁজ হওয়ার পর একদিন মোবাইল ফোনে কথা হলে শিক্ষার্থী ইরা জানিয়েছে সে পবিত্র জায়গায় আছে। খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই।
বাবা ইয়াকুব আলী জানান- স্কুলে পড়ালেখার সময় নামাজি ছিল না। বোরকাও পড়ত না। কিন্তু নিখোঁজ হওয়ার কিছু দিন আগ থেকে হঠাৎ করেই বোরকা পড়া শুরু করে ইরা।
তারপর একদিন বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। কলেজে যাওয়ার কথা বলেই ওই দিন বাড়ি থেকে বের হয়েছিল ইরা। এরপর আর ফিরেনি। শ্রীনগর উপজেলার সমষপুর স্কুল অ্যান্ড ম্যানেজম্যান কলেজ থেকে ২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় নুরুন নাহার ইরা।
এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শ্রীনগর সরকারি কলেজের একাদ্বশ শ্রেনীতে ভর্তি হয় সে। সমষপুর স্কুল অ্যান্ড ম্যানেজম্যান কলেজের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম শিকদার বলেন- স্কুলে পড়াশোনর সময় কখনই ইরাকে বোরকা পড়তে দেখিনি। নামাজও পড়ত না।
হঠাৎ করেই ইরা নামাজী হয়ে যায়। বোরকা পড়তে শুরু করে। তারপর ওর নিখোঁজ হওয়ার কারনে ধারনা করা হচ্ছে-ইরা জঙ্গিদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। মা শামীম আক্তার ও বাবা ইয়াকুব আলী নিখোঁজ ইরার সন্ধানে পুলিশের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছেন। তারা সন্তানকে ফেরত চান।