স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষার পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে নারীদের উন্নয়নে তার সরকার ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান নারী শিক্ষায় বাংলাদেশের সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে। নারীর দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা, শ্রমবাজারে ব্যাপক অংশগ্রহণ ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে এবং নারীর প্রতি সামাজিক অপরাধ রোধে ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
নারী ও কন্যাশিশুর সাক্ষরতা ও শিক্ষা প্রসারে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কো তাঁকে ‘শান্তিবৃক্ষ’ স্মারক পুরস্কারে ভূষিত করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও আইন সভা প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীর বলিষ্ঠ অবস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত, বিচারপতি, সচিব, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী এবং পুলিশ ও আনসার বাহিনীর বিভিন্ন পদে নারীরা সাফল্যের সাথে কাজ করছেন। নারীদের এই উন্নতি বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়নেরই সফল ধারাবাহিকতা।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে আজ এ কথা বলেন। আগামীকাল বেগম রোকেয়া দিবস। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এজন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং নারী জাগরণের অগ্রদূত মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন-এর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। পদকপ্রাপ্তদেরও তিনি অভিনন্দন জানান।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন,বেগম রোকেয়া শুধু একটি নাম নয়। তিনি ছিলেন নারী শিক্ষার একটি প্রতিষ্ঠান। ঊনবিংশ শতাব্দীর কুসংস্কারাচ্ছন্ন রক্ষণশীল সমাজের শৃঙ্খল ভেঙ্গে বেগম রোকেয়া নারী জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেন শিক্ষার আলো। তিনি তাঁর ক্ষুরধার লেখনির মাধ্যমে নারীর প্রতি সমাজের অন্যায় ও বৈষম্যমূলক আচরণের মূলে আঘাত হানেন।
তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনসহ বিভিন্ন সমাজ উন্নয়নমূলক কাজের মধ্য দিয়ে পশ্চাৎপদ নারী সমাজকে আলোর পথ দেখান। তাঁদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রভূত অবদান রাখেন বলেও বাণীতে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে বেগম রোকেয়ার আদর্শকে সমুন্নত রেখে নারী উন্নয়নে কাজ করেছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৭ সালে আমরা সর্বপ্রথম জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ঘোষণা করি। ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর এটিকে আরও যুগোপযোগী করে আমরা নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ প্রণয়ন করি।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার নারী শিক্ষার প্রসারে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করেছে। উপবৃত্তি, বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এবং অবৈতনিক শিক্ষা প্রদানের ফলে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। স্কুল থেকে ঝরে পড়ার হার হ্রাস পেয়েছে। ছাত্রীদের স্কুলে ভর্তির হার শতভাগ নিশ্চিত হয়েছে।
পদকপ্রাপ্ত গুনিজনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমি আশা করি, পদকপ্রাপ্ত গুণীজনেরা বেগম রোকেয়ার আদর্শে উজ্জ্বীবিত হয়ে দেশের অনগ্রসর নারীদের উন্নয়নে নিজেদের আরো সম্পৃক্ত করবেন। বেগম রোকেয়ার কর্মময় জীবন ও তাঁর আদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে দেশের নারীসমাজ আরো সামনে এগিয়ে যাবেন বলে আমার বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রী বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচি এবং বেগম রোকেয়া পদক-২০১৫ প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।