এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার কারখানা, শিল্প-বাণিজ্যিক খাত, চা-বাগান প্রভৃতি সব ক্ষেত্রেই গ্যাসের দাম গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে পেট্রোবাংলা এবং এর অধীনস্থ সংস্থাগুলো যে হারে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল তার তুলনায় বৃদ্ধির হার অনেকটাই কম হবে বলে বিইআরসির সূত্র জানায়।
তবে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত কয়েকদিন থেকেই সতর্ক করে আসছে দেশের বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো। আজ বুধবার দুপুরে বামদের বড় দু’জোট টিসিবি যুগপৎকর্মসূচি পালন করে। সকালে পল্টন থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে দুপুর ১২টার দিকে কারওয়ান বাজারের টিসিবি অফিসের সামনে নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। এতে বক্তব্য রাখেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এসএম শামসুল আলম, কলামিষ্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির রুহিন হোসেন প্রিন্স।
গণঅবস্থানে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এস এম শামসুল আলম বলেন, ‘১৯৯৮ সালে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্যাস বিক্রির অর্থ থেকে ৫৫ শতাংশ রাজস্ব (৪০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ মূসক) নিচ্ছে না এনবিআর। এ বিষয়ে তারা একটি এসআরও (২২৭ নম্বর) জারি করেছিল। এখন সেটি না মানা জনস্বার্থ বিরোধী।’
তিনি আরো বলেন, ‘কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য বাড়তি যে অর্থ সংস্থাগুলোর প্রয়োজন, তার সংস্থান তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ দিয়েই সম্ভব। গ্যাস খাতের প্রতিটি কোম্পানির হাতে বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত অর্থ রয়েছে, যা এ খাতের উন্নয়নে কোনো কাজে লাগছে না। এ অবস্থায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর কোনো যুক্তি নেই।’
সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘সরকার দেশের মানুষের নাভিশ্বাস চোখে দেখে না। ধারাবাহিকভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে, কদিন আগে বিদ্যুতেরও দাম বেড়েছে। এখন আবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর পায়তারা চলছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। প্রতিরোধ প্রতিবাদের মধ্য দিয়েই সরকারের এ অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে।’
সেলিম বলেন, ‘দেশে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। এসব টাকা আদায়ের কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু জনগণকে চুষে খাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে তারা। আন্দোলন করতে গেলেও হামলা হয়। তারা জনগণকে হাতেও মারছে, ভাতেও মারতে চাইছে।’
বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘সরকার যেই মুহূর্তে দাম বাড়ানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে আমরা তখনই সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মসূচি দেবো। প্রয়োজনে হরতালও দেয়া হবে। কিন্তু জনগণের দৈনন্দিন জীবনে আগুন লাগানোর এ চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহত করা হবে।’
এছাড়া গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ২২ থেকে ২৮ ডিসেম্বর সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ, পদযাত্রা, প্রচার ও গণসংযোগ করবে বাম মোর্চা।