সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে বলেছেন, আজকে সুনামগঞ্জে অতিবৃষ্টি ও ওপারের পাহাড়ি ঢলে বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে শুকনা মৌসুমে কৃষকদের ধান কেন তলিয়ে গেল । এটা যদি ময়মসিংহ বা আমার এলাকা পাবনায় হতো তাহলে আমরা এতো বেশি চিন্তা করতাম না। কারন সেখানে ৩ ফসলি জমি রয়েছে।
সেখানে ৩ রকমের ফসলই হয়। আজকে যেখানে সুনামগঞ্জের হাওরের এক ফসলি জমি আর সেই এক ফসলী বোরো ফসল যদি নষ্ট তাহলে বাকি ২ ফসল কি ভাবে আসবে।
আমরা যারা কাজ করে যাচ্ছি সরকারের সাথে সরকারি কর্মচারী হিসেবে, আমরা যারা দায়িত্বে আছি, আমরা কেন এই বিষয়টা দেখিনি?। অনেকে দায় সারতে পারেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড বিষয়টি দেখেনি। তাদের কার্যক্রম আসলে কিভাবে হচ্ছে?। কে দায়িত্ব পালন করল কি করল না সেটা পরে বিবেচনার বিষয়। বিবেচনার বিষয় নিয়ে কথা বলে লাভ নাই, ক্ষতি হয়ে গেছে।
এখন যারা দায় গ্রহন করেনি, দায়িত্ব পালন করেননি বলে তার শাস্তিও হয় তাহলে এটা হবে তার ব্যক্তিগত শাস্তি। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সুনামগঞ্জের অর্থনীতির যে ক্ষতি হল সার্বিকভাবে যে ক্ষতি হলো সেই ক্ষতিটা কি আসলেই পোষানো সম্ভব?
জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম আরো বলেন, আমি এখানে আসার আগে কৃষিমন্ত্রীর সাথে দেখা করে এসেছি। কারণ এ জেলার বন্যার কারনে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। আগামী এক বছর কিভাবে যাবে, না যাবে অধিকাংশ মানুষের কিন্তু সেই চিন্তায় রয়েছেন। শুধু খাওয়ার বিষয় না। রিলিফ দেওয়া হচ্ছে ৩৮ কেজি চাল আর ৫০০ টাকা। এগুলো ভিজিএফ-এর মাধ্যমে যাচ্ছে। আজকে যে ছেলে বা মেয়েটা এসএসসি পাস করল, তাকে ভর্তি করাতে গেলে কিন্তু অর্থের প্রয়োজন। সেই অর্থটা আসবে কোথা থেকে ? সে স্কুলে যাবে নৌকায় করে, তার ভাড়ার প্রয়োজন, সে টাকা কোথায় পাবে? আমরা যদি প্রশাসন মনে করি ভিজিএফ কার্ড তৈরি করে আমাদের দায় শেষ হয়ে গেছে, তাহলে আমরা ভুল করব।”
সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মঙ্গলবার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জাহেদুল হকের সভাপতিত্বে কৃষি প্রযুক্তি মেলার আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. কৃষিবিদ স্বপন কুমার সাহা প্রমুখ।