অগ্রসর রিপোর্ট : ভারতের কানপুরে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬ জনে। আহত হয়েছেন আরো শতাধিক যাত্রী। আজ রবিবার ভোরে পুখরাইয়ার কাছে পটনা-ইনদোর এক্সপ্রেসের ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতদের বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ট্রেনের ধ্বংসস্তূপ থেকে আটকেপড়া যাত্রীদের উদ্ধার কাজ এখনো চলছে।
উত্তর প্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও রেল কর্মকর্তারা জানান, ট্রেনটি ইনদোর থেকে পটনা যাচ্ছিল। রবিবার ভোর সোয়া ৩টার দিকে মালাসার ও পুখরাইয়া
স্টেশনের মাঝে ট্রেনটির ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার সময় বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমাচ্ছিলেন। একটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
ভারতের নর্দার্ন সেন্ট্রাল রেলওয়ের মুখপাত্র বিজয় কুমার এনডিটিভিকে বলেছেন, দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেননি তারা।
ওই ট্রেনের আরোহী কৃষ্ণ কেশব বিবিসিকে বলেন, প্রচণ্ড ঝঁকিতে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। সবাই খুব আতঙ্কের মধ্েয ছিলাম। আমি অনেকগুলো লাশ দেখেছি, অনেক মানুষ আহত হয়েছে।
নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন ইঞ্জিনের ঠিক পেছনে উল্টে যাওয়া দুটি বগির আরোহী। অনেক বগি দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ায় ভেতরে আটকা পড়া যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য গ্যাস কাটার ব্যবহার করতে হচ্ছে।
উত্তর প্রদেশ পুলিশের এডিজি দলজিত সিং চৌধুরী জানিয়েছেন, আহতদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিতে একটি মেডিকেল টিমও ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ট্রেন থেকে বের করে আনার পর অক্ষত যাত্রীদের কাছের মালাসা স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে একটি বিশেষ ট্রেনে করে তাদের পাটনা পৌঁছে দেয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক টুইটে এ দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর সঙ্গে কথা বলে নির্দেশনাও দিয়েছেন।
আর রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু এক টুইটে বলেছেন, এ দুর্ঘটনার জন্য যারাই দায়ী হোক না কেন, তাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে শিগগরিই একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। নিহতদের পরিবার ও গুরুতর আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা ও ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকার।
কানপুর ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে জংশন, যে স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশ ট্রেন যাতায়াত করে। দুর্ঘটনার কারণে ওই পথের ট্রেনগুলোকে অন্যপথে যেতে বলেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
বিবিসি লিখেছে, ১শ’ ২৫ কোটি মানুষের দেশ ভারতে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বিস্তৃত ট্রেন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। কিন্তু যন্ত্রপাতি পুরনো হওয়ায় প্রায়ই সেখানে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে।